জগুর কেরামতি
নীহার চক্রবর্তী (বেথুয়াডহরি, নদীয়া)

জগু নেতাজি জন্ম-জয়ন্তীতে কিছু বলবে। আমরা তো শুনে অবাক।
ওকে বললাম, ‘তুই তো ক্লাস সেভেন অব্দি পড়েছিস, জগু। কিই বা জানিস তুই নেতাজি সম্পর্কে। বাদ দে। তুই শুধু দেখ কারা কী বলে। আমাদের অনেক জানার আছে।’
কিন্তু জগু নাছোড়বান্দা। ও বলবেই।
কি আর করা। ওকে বলতে দিতেই হল।
শুরুতে জগু অমায়িক-হেসে সামনে উপস্থিত সবার করজোড়ে নমস্কার জানাল।
আমরা বেশ আগ্রহী হয়ে উঠলাম। আমাদের কেউ-কেউ প্রমাদ গুনল।
মাত্র কয়েকটা বাক্য। মাত্র কয়েকটাই।
‘নেতাজি সম্পর্কে নতুন করে কিই বা বলার থাকতে পারে। বছরের পর বছর সবাই একই কথা তো বলে যাচ্ছে। তার জন্য অবশ্য কাউকে দোষ দিতে পারি না। নতুন করে তো কোন খবর উঠে আসেনি। অতএব নেতাজির প্রতি অনেক-অনেক শ্রদ্ধা জানিয়ে এখানেই শেষ করলাম। জয় হোক নেতাজির।’
কথা শেষ করে জগু দ্রুত মঞ্চ থেকে নেমে এল। আমরা যেমন অবাক হলাম তেমনি হাসলামও খুব। বুঝলাম জগু আসল জায়গায় ঘা দিয়েছে।
এরপর যারা নেতাজি সম্পর্কে বলে গেল তাতে নতুন কিছুই পাওয়া গেল না। এককথায় ক্লিসে। তাই তেমন হাততালিও জুটল না। তবে জগু রীতিমতো হাততালি দিয়ে গেল।
পরে আমরা জগুকে কাছে ডেকে ওর নামে কয়েকবার জয়ধ্বনি দিয়ে ওকে নিয়ে একটা রেস্টুরেন্টে ঢুকলাম।
যারপরনাই বিস্মিত হলাম আমরা। আমাদের চারজনের পয়সা ওই মিটিয়ে দিল। অথচ এমন কথা ছিল না।
এখানেও আমরা জগুর কাছে হেরে গেলাম।
অতএব জয়তু জগু। তুই অতুলনীয়। পরেরবারও তোর বলা চাই। নতুন কিছু দিলে তুইই দিবি। দিগন্ত থেকে খুঁজে আনবি আমাদের জন্য স্বস্তির লেফাফা।