আজও ভুলতে পারিনি
অনন্যা হালদার (মুকুন্দপুর, কলকাতা)

গোধূলির দৃশ্য বড্ড ম্লান হয়ে আসছে
কানে ভেসে আসছে ঝিঁঝিঁ পোকার ঝিরি-ঝিরি শব্দ,
বারান্দার রেলিং ধরে দাঁড়িয়ে আছি
সামনের রাস্তা বেয়ে চলছে দু’চারটা গাড়ি।
আজ নিজেকে ভীষণ একা-একা লাগছে
হঠাৎ মনের গভীরে জেগে উঠেছে
তোমার সাথে কাটানো মুহূর্তগুলো,
স্মৃতিরা দাঁড়িয়ে আছে অনুভূতির দরোজায়।
একসাথে কাটানো কতোগুলো দোল,
খুনসুটি আর তোমার মায়াভরা মুখ,
তোমার আমার প্রথম দেখা হওয়া সেই বিয়ে বাড়ি—
যেখানে আমাদের প্রথম পরিচয়, বন্ধুত্ব, প্রেম, বিয়ে কতগুলো ফাগুনী রাত!
অপলক চোখে তাকিয়ে প্রেমের স্রোতে
কত ভেসেছি দুজনে! সব মনে পড়ে।
অথচ আজ আমি বড়ো একা, বড্ড একা!
জানি, তোমার আর মনে পড়ে না আমাকে,
মনে পড়ে না আমাকে দেওয়া কথাগুলো।
একসাথে চলার শপথ নিয়েছিলে তুমি,
রঙিন স্বপ্ন এঁকে দিয়েছিলে আমার দু-চোখে।
বলেছিলে এই ভালোবাসা এক জন্মের নয়, জন্ম জন্মান্তরের।
কী করে ভুলে গেলে সেই সমস্ত কিছু?
কিন্তু আমি যে আজও ভুলতে পারিনি
আশায় বুক বেঁধে থাকি আর ভাবি–
অমানিশা কেটে নতুন ভোর আসবে,
ফুরিয়ে যাওয়া ভালোবাসা আবার উত্তাল সমুদ্রে ঝড় তুলবে।
জানি না এভাবে আর কতদিন, কত রজনী কাটাতে হবে ভাবনার দেশে।
নিয়তির লিখনে আবার কি আমাদের দেখা হবে কোনোদিন?
না-কি হতাশার অন্ধকারে কুঁকড়ে-কুঁকড়ে বিলীন হয়ে যাবে আমার ভাবনাগুলো…?