মন্দির

শুভঙ্কর সরকার (দিনহাটা, কোচবিহার)

    সজ্জিত কুটির লজ্জিত নীড়,
                           মন্দিরখানি তাহার মাঝে।
    জ্বলেনা তো ধুপ আর পুষ্পরূপ,
                             প্রভাতে বা সাঁঝে।
    আলো ঝলমলে নানারূপে জ্বলে,
                            কুটির উজ্জ্বল হয়।
    যথাস্থানে কালি শুধু বলাবলি,
                         মন্দির আধারময়।
  সকলে ব্যস্ত কর্মে দেবতা ভাবিত মর্মে,
                      আমাতে নাহি দৃষ্টি।
 তুমি যাহা করো হিসাবে না ধরো,
                     জীবজগৎ মোর সৃষ্টি।
   দেবতা শয়নে দেখিনা নয়নে,
                      রজনী হইতে ভোর।
   নহি সেবা দাস-দাসী করি হাসাহাসি,
                      এ দায় কি মোর।
  দেবতার প্রাণ করে আনচান,
                  এইতো মানবকুল।
    নরজাতি ভাবে ব্রত তে কি হবে,
                       অর্থই যথা মুল।
    নয়রে অর্থ ভক্তিই যথার্থ,
                      দেবতা পূজিবার তরে।
    তাহা দিতে হায় আত্মা চলিয়া যায়,
                           মস্তক কুটিয়া মরে।
    বদনে ঈশ্বর নাম পীঠস্থান আর ধাম,
                          কিঞ্চিৎ নয়নবারি।
     এক টুকরো ফল, তুলসি, গঙ্গাজল,
                        নাহি দিতে পারি।
     বিষয়ের তাপ, আবর্জনার চাপ,
                       রয়েছে মন্দির ঘিরিয়া,
    করিনা পরিষ্কার ভক্তি আবিষ্কার,
                    ভ্রমি পশ্চাদ ফিরিয়া।
      দশ ইন্দ্রিয়ের টানে মন্দির প্রাঙ্গনে,
                           জ্বলেনা ধূপকাঠি।
      শত পীঠস্থান আখ্যান বা পুরান,
               লেপণহীন মন্দির মাটি।
      মানব দুর্মতি হেরি পরিণতি,
                      দেবতা নীরবে কাঁদে।
      মন্দিরের দ্বার রুদ্ধ সকোলার,
                      মোরা জ্বলি কি সাধে ?
       সকলের শরীরে মন্দির বন্দি রে,
                          নির্মাণকারী একজনা।
      মোরা উদাসীন তবু শ্রদ্ধাহীন,
                         মেলেনা বিশ্বাসকণা।
      কুটিরের আলোয় পথের ধুলোয়,
                 বহুতলে জ্বলিছে দ্বীপ।
      মন্দিরের মাঝে দিবসে বা সাঝে,
                   জ্বলেনা সন্ধ্যাপ্রদীপ।
      শ্রেষ্ঠ জীব নাকি নির্জীব,
                      মানবজাতি মোরা ভালো ?
       শত উৎসব জন কলরব,
                      মন্দিরে জোনাকির আলো।
CATEGORIES

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus (0 )