সভ্য সমাজে নারী

প্রসেনজিৎ কুন্ডু (কলকাতা)

এই মেয়ে,
মুছে ফেল চোখের জল।
কিসের কান্না তোর?
কিসের ভয়!
ঐ দেখ নীল আকাশ
— কালো মেঘে ভরা।
তবুও সে হাসছে মাথার উপর।
তুইও তেমনি করে ভুলে যা
তোর কান্না!
ভুলে যা তোর পোশাকের লাল দাগ।
বল তোর কিসের লাজ?
তুই যে পার করেছিস তোর শৈশোব,
ওরে আজ যে তুই নারী।

নারী,
তুই উজ্জ্বল মুখ, তোর পিতার।
তাইতো তোর চলার পথ
অতি দূর্গম।
কোথাও বা সংকীর্ণ, এই সমাজে।
কী এই সমাজ?
কী জানিস তুই তার?
এই সমাজ দাবি করে
সে উন্নত, সভ্য ও আধুনিক।
কিন্তু কোথায়, সে আধুনিকতা?
কোথায় সে সামাজিক চেতনা, জ্ঞান?
আছে ধর্ম, জাতিভেদ,
আছে বিভেদ, ক্ষিদে, লোভ-লালসা।
আর আছে অসহিষ্ণুতার মাঝে
পুরুষ তান্ত্রিক অধিকার।
নারী,
তাইতো তোর চলার পথ
জটিল, কুটিল ও অতি দূর্গম।

নারী,
তুই তো বোন!
তুই তো মায়ের জাত,
তুই তো দিশা
আগামী দিনে পথ চলার।
তুই একটা মাংসপিন্ড
নর পিশাচের ক্ষিদে মেটাবার।
তোর গর্ভ মা, নব জাতকের ঘর।
তবুও কেউ বোঝেনা, তোর ব্যথা।
তাইতো থাকিস পড়ে
পদপিষ্ট ধূলার ন্যায়।
যেমন চাঁদটা –
কালো দাগে ভরা,
নেই তার নিজের আলো
তবুও সে কতো সুন্দর।
তেমন সূর্য বিলিয়ে তার কিরণ
পাইনিকো সৌন্দর্যের তাজ।
নারী, তুই উজাড় করে সব
বলনা!
কী পেয়েছিস এ জীবনে!

নারী,
আর কতো সইবি বল
এ সমাজের জ্বালা,
আর কতো ফেলবি চোখের জল
নিভৃতে একা।
এসেছে সময়,
ঘুরে দাড়াবার।
নারী,
বেড়িয়ে আয় তুই
তোর খোলস ছেড়ে।
দেখিয়ে দে তোর শক্তি,
তুই যে নব দূর্গার রূপ
শত্রু বিনাশ-ই তোর কাজ।
যেভাবে পুরাণে দশভুজা
ত্রিশূলের আঘাতে
এনেছে ক্ষত অসূরের বুকে,
সেভাবে তুই নারী
নখের আঁচড়ে
রাঙিয়ে দে লালে
সভ্য সমাজের অত্যাচারীর বুক।
নারী, তুই-ই পাড়বি
থামাতে শোষণ, পীড়ন
কিংবা ঝোপের আড়ালে থাকা
পাষাণ হৃদয়ের অট্টহাসি।

নারী,
তুই তো মা,
দিয়ে জন্ম নতুন প্রাণ
শুকায়নি আজও
তোর জরায়ুর ক্ষত,
তুই সইবি আর কতো?
বলনা!
এ সভ্য সমাজের –

  • যতসব অসভ্য পদক্ষেপ।
CATEGORIES

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus (0 )