মায়ের আঁচল
মৌসুমী ডিংগাল (কলকাতা)

মাত্র দেড়শো টাকার শাড়িটা যখন
মায়ের গায়ে আটপৌরে করে জড়ানো থাকে,
তখন তার মূল্য বেড়ে যায় বহুগুণ;
হাজার মণিমাণিক্যের সমান,
সেটা তখন মায়ের আঁচল।
নিজেকে বাঁচানোর এক নিরাপদ আশ্রয়।
বাবার কঠিন রাগের হাত থেকে রক্ষা পেতে
কতো বার আমাদের লুকাতে হয় ওখানেই।
কতো ক্ষমা অযোগ্য অপরাধ ঢাকা পড়ে
ঐ মায়ের আঁচলে!
ভাত খাবার পর হাত-মুখ ধুয়ে নিয়ে হাত-মুখ মোছার তৃপ্তির জায়গা কিন্তু ঐ মায়ের আঁচল;
তার চেয়ে বেশি সুখ কোথায় আর?
কিংবা বুক ভরা ব্যথা যখন চোখ ভরে দেখা দেয়
তখন মায়ের আঁচল সব কষ্ট শুষে নেয়।
মনটা একেবারেই হয়ে যায় হালকা।
ভাঙা চোরা দরজায় ঝোলানো তালার চাবিটা যখন মায়ের আঁচলে বাঁধা থাকে তখন সে ঘর হয়ে ওঠে
রাজপ্রাসাদ।
বিয়ের পর বাপের বাড়ি থেকে বিদায় নেওয়ার সময়
মাতৃঋণ কনকাঞ্জলী রূপে ঐ মায়ের আঁচলেই তো
শোধ করে আসা!
তারপর;মায়ের আঁচল সরে যায় মাথার উপর থেকে,
থাকে না আর নিরাপদ আশ্রয়।
সুতোর টান বোধহয় কমতে থাকে একটু একটু করে;
মনের কষ্টগুলো আর বলা যায় না আগের মতো।
মায়ের আঁচলের অভাব অনুভব করতে পারি আমরা
প্রতি মুহূর্তেই;
তারপর নিজেও মা হয়ে ওঠা।
বুঝতে পারি মায়েরও কতো দুঃখের কাহিনী লেখা থাকে ঐ আঁচলে।