ভ্রুণ হত্যা
সোমা চ্যাটার্জী (কলকাতা)

মা! তুমি কি অনুভব করতে পারছো,
আমার অস্তিত্ব?
আমি তোমার গর্ভে,
একটু একটু করে বেড়ে চলেছি।
তুমি উজার করে দিচ্ছো,
তোমার স্নেহ মায়া-মমতা!
আমি যখন ভূমিষ্ঠ হব,
জানি, তখন এই ভাবেই ভালবাসবে তুমি।
দেখতে দেখতে চার মাস হয়ে গেল,
তুমি এত ছটফট করছ কেন মা?
আমাকে কোলে নেবে বলে!
তোমার স্নেহ মাখা চুম্বনে আমায় ভরিয়ে দেবে বলে?
জানো মা! আমি এখন অনেকটা বড় হয়েছি,
সাত মাস বয়স হলে যে আমার।
আর মাত্র ক’টা মাস,
তারপর, আমি তোমায় স্পর্শ করতে পারব।
বাইরে কাদের যেন কোলাহল শুনতে পাচ্ছি,
তারা তোমাকে কি বলছে মা?
তুমি তাদের কথায় কেন কাঁদছো?
আমার খুব ভয় করছে মা!
মাগো! আমার যে খুব কষ্ট হচ্ছে,
আমি আর সহ্য করতে পারছি না মা!
মা! ওরা কি আমায় মেরে ফেলতে চাইছে?
তুমি তো মা! তুমি পারোনা আমায় বাঁচাতে?
এ যে অসহ্য কষ্ট মা!
আমার গলা শুকিয়ে আসছে,
একটু, একটু জল দাও আমায়!
মা! তুমি কি আমার আর্তনাদ শুনতে পাচ্ছ না?
মা মাগো, তোমরা আমায় বাঁচতে দাও।
এইভাবে শেষ করে দিও না আমায়।
জানো মা, আমি আর এখন তোমার মধ্যে নেই!
আমাকে ওরা এক কোণে ফেলে রেখেছে।
আমার এই পরিণতির কারণ,
আমি কন্যা সন্তান, তাই না মা?
একি মা! তোমার চোখ বেয়ে যে,
রক্তধারা বয়ে চলেছে।
আমাকে হারিয়ে তুমি,
এত কষ্ট পাচ্ছ?
আর কেঁদো না মা,
ওরা তোমার কষ্ট বুঝবে না।
তুমি যে বড় অসহায়,
তাই প্রতিবাদ করতে না পেরে,
তিলে তিলে নিজেকে শেষ করে চলেছো।
আমি তোমায় কথা দিচ্ছি !
আমি আবার আসবো,
তোমার সন্তান হয়ে!
এই পৃথিবীতে জন্ম নিতে।