লড়াইটা সহজ ছিল না

লড়াইটা সহজ ছিল না

হার না মানা এক নিম্নবিত্ত পরিবারের যুবকের কাহিনী

নীহারিকা মুখার্জ্জী চ্যাটার্জী, কলকাতা -: নিম্নবিত্ত ঘরের ছেলেমেয়েরা যখন বড় কোন স্বপ্ন দেখেন, তখন প্রায় তাকে শুনতে হয় ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানোর মত কটাক্ষ। তেমনি কটাক্ষের মাঝে বড় হয়েছেন প্রদ্যুৎ নাথ। অত্যন্ত নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলে তিনি, তার বাবা একটি ফ্যাক্টরিতে কাজ করেন, পরিবারে বাবা ছাড়াও তার দিদুন আর দাদু আছে। বাবার পরে পুরো পরিবারের রোজগেরে ছেলে বলতে তিনিই। অথচ সেই ছেলেই আর পাঁচটি চিরাচরিত পেশার মধ্যে না গিয়ে বেছে নিল ইউটিউব চ্যানেলকে। গল্প শোনার এক অদ্ভুত নেশা থেকে প্রদ্যুত চালু করেন একটি অডিও চ্যানেল গল্পমালঞ্চ (Golpomalonchoo)। মা নেই, বাবা এইসব জগৎ থেকে কয়েকশো হাত দূরে, একার লড়াই শুরু হয় তার। নিজের পকেট থেকে টাকা বের করে তিনি ভয়েস আর্টিস্ট থেকে শুরু করে লেখকদের প্রত্যেককে টাকা দিতে থাকেন। অথচ তার ইউটিউব চ্যানেলটি জেগে ওঠার পরিবর্তে ক্রমশ যেন ম্রিয়মান হয়ে যাচ্ছিল। দিনকে দিন ভিউজ কম ছিল এই চ্যানেলের। অন্যদিকে জমিয়ে রাখা টাকাও শেষের পথে। প্রদ্যুৎ সিদ্ধান্ত নেন চ্যানেল বন্ধ করবেন। তবে তার আগে একবার শেষ চেষ্টা করে দেখবেন, এ যেন সব শেষের আগে মরিয়া হয়ে একবার বেঁচে ওঠার লড়াই। এবার আর ভূত নয়, লাভ এঙ্গেলের গল্প নিয়ে হাজির হন প্রদ্যুৎ। গল্পের নাম ‘মেঘে ঢাকা তারা’। সঙ্গীতা চৌধুরীর কলমে লেখা এই রোমান্টিক গল্পটি শ্রোতা বন্ধুদের অন্তরাত্মা ছুঁয়ে যায়। ভিউজ ও কমেন্টের বন্যা বয়ে যায় চ্যানেল জুড়ে। অডিও স্টোরি চ্যানেলে নিজের লেখা গানের সংযোজন করে রীতিমত বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলেন প্রদ্যুৎ। তার এই অভিনব পরিকল্পনা নিয়ে যখন চারিধারে এত কথা হচ্ছে তখন উচ্ছ্বসিত প্রদ্যুৎ বলেন, এসবের কৃতিত্ব তার একার নয়। একটি গল্প দাঁড়িয়ে থাকে লেখিকা, ভয়েজ আর্টিস্ট, পোস্টার ডিজাইনার, সহ এডিটর, সিইও -সবের ওপরে। 'মেঘে ঢাকা তারা'র এই সাফল্য আসলে সকলের প্রাপ্য। এক‌ইসঙ্গে তিনি বলেন মেঘে ঢাকা তারা আসলে হারতে হারতে জিতে যাওয়ার গল্প। প্রদ্যুৎ বলেন,‘ আমার কাছে তো বলতে হলে বলবো, হারতে হারতে জিতে যাওয়ার গল্প মেঘে ঢাকা তারা।যে গল্প আমাকে আমার শ্রোতা বন্ধুদের কাছাকাছি নিয়ে এসেছে। তাদের ভালোবাসাই আমার লড়াইয়ের শক্তি’।

CATEGORIES

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus ( )