চেনা-অচেনা

নীহার চক্রবর্তী (বেথুয়াডহরি, নদীয়া)

লোকটা স্মিত হেসে বলল, ‘আমি লিখতে জানি না, পড়তে জানি না। শুধু…’
‘শুধু কী গো?’
আগ্রহভরে জিজ্ঞেস করলাম।
সে বেশ বিজ্ঞের সুরে উত্তর দিল, ‘বুঝতে জানি বেশ। মানে কে কেমন মনের। কোন মনে কাদা, আর কোন মন সাদা।’
অবাক হলাম শুনে।
বললাম, ‘কী ভাবে বোঝ, শুনি?’
সে অমায়িক-হেসে উত্তর দিল, ‘আপনারা শিক্ষিত মানুষ মানুষকে বুঝতে চান কত কূটকাচালি ব্যবহার করে। কত নীতি, আর কত রীতি। ধুস… এসবের কোন মানেই হয় না। এত বেশি বুদ্ধি ব্যবহার করার কিছু নেই। দু’চারটে কথা আর দু’একদিন চললেই বোঝা যায়। শিক্ষিত মানুষ বুঝতে বুঝতে গিয়ে ভুল করে বসে। ভালকে মন্দ, আর মন্দকে ভাল বুঝে পরে বোকা বনে যায়। আসলে মানুষকে বুঝতে নিজেকেও মানুষ হতে হয়। এখানেই যত সমস্যা।’
তার কথাগুলো শুনে মৃদু হাসলাম।
তাকে বললাম, ‘মন্দ বলেননি। কত লেখাপড়া শিখে মানুষকে বোঝাই হল না নিজের মনুষ্যত্ব প্রমাণ করতে না পেরে। আসলেই কি কখনও আমরা কেউ প্রমাণ করতে চাই নিজেকে?’
সে শুনে অমায়িক-হেসে অন্য প্রসঙ্গে চলে গেল। যেখানে আর মানুষ নেই। শীতের রাতে পথ-কুকুরদের কষ্টের কথা সে ব্যথাতুর মুখে বলতে থাকল। মনুষ্যত্বে আর মানবেতরত্বে বেশ লড়াই বাঁধিয়ে দিল সে।

CATEGORIES

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus ( )