অগ্নিকন্যা

চিত্রা কুণ্ডু বারিক (কলকাতা)

  একটা দেশলাই কাঠি যা সামান্য ঘষা দিলেই জ্বলে ওঠে, নীরবে করে মরতে থাকে। তার অনেক অবদান রেখে যায় এই পৃথিবীতে। কারো পেটের অন্ন যোগায়, কারো নেশা মেটায়, আবার কারো খেলার সঙ্গী হয়ে সাথে থাকে। 

 কিন্তু যে জ্বালায় সে বোঝেনা যে জ্বলছে তার যন্ত্রণা। একজন মজা নেয় একজন ধীরে ধীরে জ্বালানি হয়ে পুড়তে থাকে। তার মুখ নেই তাই সে চিৎকার করতে পারে না। টপটপ আগুনের নিচে জল পড়তে থাকে, সে জল সবার চোখে পড়ে না। আদিম যুগ ধরে এমন ঘটনা চলেই চলছে। 

 এক একসময় নীরবে ফুঁসতে ফুঁসতে সামনে যা থাকে বাড়িঘর, জঙ্গল জ্বালিয়ে ছারখার ও করে দিয়েছে। কারণ সে একজন নারী। সে আদি সে অন্ত। সে গর্ভধারিনী। সহ্য ক্ষমতা পুরুষদের চেয়ে নারীদের অনেক বেশি। জীবনে সমস্যার সম্মুখীন হতে তারা পিছপা হয় না কখনো। 

 তবুও নারীদের প্রতি মুহূর্তে অসম্মান, অত্যাচার সহ্য করে যেতে হয় মুখ বুজে। পৃথিবীতে যা কিছু অন্যায় আঙ্গুল ওঠে নারীদের প্রতি। 

 পুরুষ আজ তুমি হাসছো, মজা নিচ্ছো নাও গো আরও আনন্দময় হোক তোমার জীবন। কিন্তু একটা কথা মনে রেখে চলতে শেখো তোমার নেশা মেটাবার জন্য যেমন বারুদ আমি, আমাকে জ্বালিয়ে তোমার সিগারেটের ধোঁয়া ওঠে যেমন, ভুলে যেও না তোমার শেষ দিনের ধোঁয়াটা দগদগ করে জ্বলে ওঠার জন্য সেই আমিই আছি, থাকবো চিরকাল। আমি অগ্নিকন্যা নামে পরিচিত। বেশিদিন অন্যায়ের আপোষ করবো না। ভাবছো তো আমি সামান্য, একদিন অসামান্য হয়ে যাবো সেইদিন তুমি নত হবে। তোমার দাম্ভিক, তোমার বদমেজাজি, তোমার আচরণ খুব অল্প সময়ের জন্য। 

  আমি অগ্নিকন্যা নামে পরিচিত। সকলে ভয় পায় আমার নামে। কারণ আমি সৃষ্টি করেছি আর ধ্বংস করাও আমার কাজ। সেইদিন আমি হাসবো হা হা হা হা আর তুমি জ্বলবে। 
CATEGORIES

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus ( )