মাইথন ড্যামে নিরাপত্তার অভাব, গাজা কোম্পানির বেপরোয়া কাজে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা

মাইথন ড্যামে নিরাপত্তার অভাব, গাজা কোম্পানির বেপরোয়া কাজে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা

কৌশিক মুখার্জী: সালানপুর:- জল জীবন মিশনের অধীনে মাইথন ড্যামের থার্ড ডাইক পিকনিক স্পটের কাছে পানীয় জল সরবরাহের জন্য ইনটেক জেটি নির্মাণে নিয়োজিত গাজা ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির বেপরোয়া কার্যকলাপ চরমে পৌঁছেছে। নিরাপত্তার প্রতি কোনও গুরুত্ব না দিয়ে এবং শতাধিক শ্রমিকের জীবনের ঝুঁকি উপেক্ষা করে কোম্পানি কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে যে কোনও সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।মাইথন ড্যামের তীরবর্তী এলাকা থেকে গভীর জলাশয় পর্যন্ত পাইপলাইন স্থাপনের জন্য আরসিসি পিলার নির্মাণের কাজ চলছে।কিন্তু এই কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের হেলমেট, সেফটি বেল্ট, সেফটি শু বা অন্যান্য নিরাপত্তা সরঞ্জাম দেওয়া হচ্ছে না।শ্রমিকদের কয়েক ফুট উচ্চতায় এবং জলের মাঝখানে কোনও নিরাপত্তা সরঞ্জাম ছাড়াই কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে।এমনকি কোম্পানির সাইড অফিসের কাছে ভারী ইস্পাতের কাজ, ওয়েল্ডিং, কাটিং এবং আনলোডিংয়ের ক্ষেত্রেও নিরাপত্তার কোনও ব্যবস্থা নেই। আশ্চর্যজনকভাবে, কোম্পানির সুপারভাইজার থেকে সাইড ইনচার্জ পর্যন্ত কেউ হেলমেট ব্যবহার করছেন না।গত ২১ জানুয়ারি সালানপুর ব্লকের ডালমিয়া নিউ রেলওয়ে সাইডিংয়ের কাছে পাইপলাইন স্থাপনের সময় নিরাপত্তাহীনতার কারণে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটেছিল। মাটি ধসে পড়ে তিনজন শ্রমিক—পাকুড়ের রজ্জাক শেখ (২২), রোহিত উদ্দিন শেখ (১৮) এবং চিনাকুড়ির নিতেশ পাসওয়ান—প্রাণ হারান। আরেক শ্রমিক শামসুল শেখ (২০) গুরুতর আহত হন। ঘটনার পর মৃত শ্রমিকদের পরিবারকে পিএইচই বিভাগের তরফে ২ লক্ষ এবং ঠিকাদারের তরফে ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়। কিন্তু এই ক্ষতিপূরণ কি একটি জীবনের মূল্য তুলে ধরতে পারে? দুর্ভাগ্যজনকভাবে, পিএইচই বিভাগ এই ঘটনা থেকে কোনও শিক্ষা গ্রহণ করেনি এবং মাইথন ড্যামে একই ধরনের অবহেলা অব্যাহত রয়েছে।

পিএইচই বিভাগ এই বিষয়ে সম্পূর্ণ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে।একটি জায়গায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটার পরও মাইথন ড্যামে একই ধরনের অবহেলা চলছে। শ্রমিকদের জীবনের মূল্য এখানে মাত্র কয়েক লক্ষ টাকায় মাপা হচ্ছে।স্থানীয় প্রশাসন বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও কঠোর পদক্ষেপ না নেওয়ায় গাজা কোম্পানির বেপরোয়া কার্যকলাপ অব্যাহত রয়েছে।মাইথন ড্যামে চলমান এই নিরাপত্তাহীন কাজ যে কোনও মুহূর্তে বড় দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।শ্রমিকদের জীবন রক্ষার জন্য অবিলম্বে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ এবং পিএইচই বিভাগের তদারকি জোরদার করা অত্যন্ত জরুরি। নইলে আরও মূল্যবান প্রাণের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা অস্বীকার করা যায় না।

CATEGORIES

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus ( )