চরণপুরে ভূমিধসের আতঙ্কে গ্রামবাসীরা, তৎপর ইসিএল ও প্রশাসন

চরণপুরে ভূমিধসের আতঙ্কে গ্রামবাসীরা, তৎপর ইসিএল ও প্রশাসন


কৌশিক মুখার্জী: বারাবনি:- বারাবনি থানা এলাকার শ্রীপুর  সাতগ্রাম অঞ্চলের চরণপুর গ্রামের হাটতলায় শুক্রবার সকালে ঘটে যাওয়া ভূমিধসের ঘটনায় গ্রামবাসীদের মনে ছড়িয়েছে অজানা আতঙ্ক। হঠাৎ করে গ্রামের একটি অংশ মাটির তলায় ধসে পড়ায় সৃষ্টি হয়েছে বিশাল গভীর গর্ত। যদিও এই ঘটনায় কোনও প্রাণহানির খবর মেলেনি, তবু স্থানীয়রা নিজেদের ঘরে থাকতে ভয় পাচ্ছেন।খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে বারাবনি থানার পুলিশ ও ইস্টার্ন কোলফিল্ডস লিমিটেড (ইসিএল) কর্তৃপক্ষ। গর্ত ভরাট ও বাসিন্দাদের নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছে তারা।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে প্রথম ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। শুক্রবার ভোরে পুনরায় মাটি ধসে পড়ায় পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হয়ে ওঠে।গ্রামের বাসিন্দারা তৎক্ষণাৎ বারাবনি থানার পুলিশ, স্থানীয় প্রশাসন এবং ইসিএল কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হন।গ্রামের এক বাসিন্দা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “ঘরে থাকতে ভয় লাগছে।কখন মাটি ধসে আমাদের সব শেষ করে দেবে, জানি না।” বারাবনি ব্লকের বিডিও শিলাদিত্য ভট্টাচার্য ঘটনার গুরুত্ব উপলব্ধি করে ইসিএল প্রবন্ধনের সঙ্গে তৎক্ষণাৎ যোগাযোগ করেছেন।তিনি জানান,“গর্ত ভরাটের কাজ শীঘ্রই শুরু হবে। এছাড়া, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরের জন্য ইসিএলের সঙ্গে আলোচনা চলছে।আমরা পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রাখছি।”ইসিএলের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ভূমিধসের কারণ সম্ভবত পুরনো খনির ‘চানাক’ বা ভূগর্ভস্থ ফাঁকা স্থান।তিনি বলেন, “ব্রিটিশ আমলে এই এলাকায় ভূগর্ভস্থ কয়লা খনন হয়েছিল।সেই ফাঁকা জায়গা ধসে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে।” ইসিএল ইতিমধ্যে ঘটনাস্থলে ব্যারিকেডিং করে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে। গর্ত ভরাটের কাজও দ্রুত শুরু করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।এই ঘটনা চরণপুর গ্রামে নতুন নয়। অতীতেও এই অঞ্চলে একাধিক বার ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে, যা স্থানীয়দের জীবনযাত্রাকে বিপন্ন করে তুলেছে। গ্রামের এক প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, “এই খনির জন্য আমাদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। প্রশাসনের কাছে দাবি, শুধু গর্ত ভরাট নয়, এলাকার ভূগর্ভস্থ পরিস্থিতি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পরীক্ষা করা হোক।”ইসিএল ও প্রশাসনের তৎপরতা সত্ত্বেও গ্রামবাসীদের মনে অনিশ্চয়তা ও ভয় কাটেনি। পুলিশ ঘটনাস্থলে মোতায়েন রয়েছে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রশাসন সর্বদা সতর্ক। স্থানীয়রা এখন দীর্ঘমেয়াদি সমাধান ও নিরাপদ ভবিষ্যতের আশায় প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে।

CATEGORIES

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus ( )