
চিত্তরঞ্জনের অন্ধকার: নিরাপত্তার প্রহসন, অপরাধের জয়গান
কৌশিক মুখার্জী: চিত্তরঞ্জন:-
চিত্তরঞ্জন,একদা শান্তির স্বর্গ, আজ অপরাধের ছায়ায় ঢাকা। একের পর এক ঘটনা শহরের নিরাপত্তা ব্যবস্থার মেরুদণ্ড ভেঙে দিচ্ছে। খুন, ছিনতাই, অস্ত্র দিয়ে আক্রমণ, চুরি—এমন অগণিত অপরাধের সাক্ষী এই শহর। পুলিশ আর আরপিএফ-এর তদন্তের নামে চলে কেবল কাগজপত্রের নাটক। দোষীরা মুক্ত, নির্ভয়ে ঘুরে বেড়ায়, আর তদন্তের ফাইল চাপা পড়ে আমলাতন্ত্রের ধুলোয়। এবার আবারো এক চাঞ্চল্যকর ঘটনায় কেঁপে উঠল চিত্তরঞ্জন—৪৩ নম্বর রাস্তার ৭এ কোয়ার্টারে চুরি, আর এক তরুণের জীবন সংকটে।
অশোক ভট্টাচার্য, চিত্তরঞ্জনের ১৬ নম্বর শপের প্রগ্রেস বিভাগের একজন নিষ্ঠাবান কর্মী। রূপনারায়নপুরে নতুন বাড়ির গৃহপ্রবেশ উপলক্ষে তিনি তিন দিনের জন্য বাড়ি ছেড়েছিলেন। তাঁর ৭এ কোয়ার্টারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল পাড়ারই ২৮ বছরের তরুণ রাজুকে। কিন্তু গতকাল রাতের অন্ধকারে অশোকবাবুর বাড়িতে সংঘটিত হল এক নৃশংস চুরি। সকালে রাজুর বিলম্ব দেখে তাঁর পরিবারের সদস্যরা বাড়িতে গিয়ে হতবাক! সামনের দরজার তালা ভাঙা, আর রাজু অচৈতন্য অবস্থায় মেঝেতে লুটিয়ে। স্থানীয়দের কোলাহলে ঘটনা ছড়িয়ে পড়ে। রাজুকে তড়িঘড়ি চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তাঁর অবস্থা এখনো আশঙ্কাজনক।
চুরির বিস্তারিত এখনো অস্পষ্ট। কী হারিয়েছে, তার তালিকা এখনো প্রকাশিত হয়নি। তবে এই ঘটনা চিত্তরঞ্জনের নিরাপত্তার জরাজীর্ণ চিত্র আরেকবার উন্মোচন করেছে। পুলিশ এসেছে, আরপিএফ এসেছে, তদন্তের ঢাক পিটিয়েছে—কিন্তু জনমনে প্রশ্ন: এই তদন্ত কি আবারো ধামাচাপা দেওয়ার নাটক? দোষীরা কি আবারো হাসিমুখে পার পেয়ে যাবে?
চিত্তরঞ্জন আর সেই চিত্তরঞ্জন নেই। যে শহর একদিন শান্তির প্রতীক ছিল, সেখানে এখন অপরাধের দাপট। নিরাপত্তার নামে চলছে প্রশাসনের প্রহসন। পুলিশ-আরপিএফ-এর নিষ্ক্রিয়তা আর অদক্ষতা অপরাধীদের সাহস বাড়াচ্ছে। একের পর এক ঘটনা প্রমাণ করছে, চিত্তরঞ্জনের জনগণ আজ নিরাপত্তাহীন। অশোকবাবুর বাড়ির চুরি, রাজুর উপর হামলা—এগুলো কেবল ঘটনা নয়, এগুলো প্রশাসনের ব্যর্থতার কলঙ্ক।
এই ঘটনা আমাদের জাগিয়ে তুলুক। চিত্তরঞ্জনের জনগণের ক্ষোভ এখন ফুটছে। প্রশ্ন উঠছে—কবে ফিরবে শান্তি? কবে প্রশাসন তাদের দায়িত্ব পালন করবে? নাগরিকদের নিরাপত্তা কি শুধুই কাগজের প্রতিশ্রুতি? এই অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আসার সময় এসেছে। চিত্তরঞ্জনের জনগণকে একজোট হতে হবে, প্রশাসনের ঘুম ভাঙাতে হবে।