আতঙ্কের রাত
পার্থ প্রতিম চ্যাটার্জী (হলদিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর)

প্রচন্ড ঝড় বৃষ্টির রাত। আকাশ জুড়ে মুহুর্মুহু বাজ পড়ছে। জনমানব হীন ভগলদীঘি স্টেশনে ডিউটিতে আজ স্টেশন মাস্টার সব্যসাচী বাবু ও তার সাথে পয়েন্টস ম্যান শ্রীণু। ঝড় বৃষ্টির রাত হলেও আজ মালগাড়ি চলার কোনো বিরাম নেই। এই বৃষ্টির মধ্যেও বারবার সিগন্যাল এক্সচেঞ্জ করতে হচ্ছিলো শ্রীণুকে। এমন সময় খুব জোরে এক বাজ পড়লো। চারিদিক হটাৎ আলোকিত হয়ে উঠলো। বাজ পড়লো পয়েন্ট জোন ট্র্যাক সাৰ্কিটে। সাথে সাথে সব্যসাচী বাবুর মনিটরে লাল হয়ে ফেল হয়ে গেলো ওই ট্র্যাক সার্কিট। ইতিমধ্যেই ডাউনে মালগাড়ি ছেড়েছে। সব্যসাচী বাবুর শ্রীণুকে পাঠালেন পাইলট আউট করতে। ক্লাম্প ও মেমো নিয়ে রেনকোট পরে রওনা হলো শ্রীণু। হঠাৎ যেতে যেতে দেখলো রেললাইন এর ধারে বৃষ্টির মধ্যেও কেউ একজন রেনকোর্ট পরে ঝোপের ধারে কিছু খুঁজছে।
শ্রীণু তাকে জিজ্ঞাসা করলো, কি ব্যাপার কি করছেন এখানে। ভদ্রলোক মুখ না ঘুরিয়েই খ্যাসখ্যাসে গলায় বললো, আমার মাথাটা জানেন তো কিছুতেই খুঁজে পাচ্ছি না।
শ্রীণু কথার মাথা মুন্ডু না বুঝে, জিজ্ঞাসা করলো, "কি বলতে চাইছেন, বুঝতে পারলাম না।" হটাৎ সেই ব্যক্তি কোর্ট এর ঢাকনা সরিয়ে শ্রীণুর দিকে ঘুরে দাঁড়ালো। শ্রীণু আশ্চর্য হয়ে দেখলো, ওই ব্যক্তির ধড়ের উপর মাথা নেই। দেখেই শ্রীণুর ভয়ে আতঙ্কে গলা শুকিয়ে গেলো। সব ফেলে মারলো ছুট। একছুটে স্টেশনে এসে কাঁপতে কাঁপতে সব্যসাচী বাবুকে সব বললো। ততক্ষণে এসে উপস্থিত হয়েছেন সিগন্যাল মেন্টেনার অমিত বাবু। তার দৌলতে পয়েন্ট জোন ট্র্যাক সার্কিট মেরামত হয়ে, মালগাড়ি সিগন্যাল পেয়ে আস্তে আস্তে চলতে শুরু করলো।
CATEGORIES কবিতা