অপারেশন সিন্দুর,পহেলগাঁওয়ের শোক থেকে আসানসোলের উল্লাস, জাতীয় পতাকার গর্বে লাড্ডুর মিষ্টি

অপারেশন সিন্দুর,পহেলগাঁওয়ের শোক থেকে আসানসোলের উল্লাস, জাতীয় পতাকার গর্বে লাড্ডুর মিষ্টি

কৌশিক মুখার্জী: আসানসোল:-

গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিরীহ মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় গোটা ভারতবর্ষ শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েছিল। বিশেষ করে হিন্দু পর্যটকদের লক্ষ্য করে চালানো এই নৃশংস হামলা দেশের মানুষের হৃদয়ে গভীর ক্ষত তৈরি করেছিল। কিন্তু মাত্র দুই সপ্তাহের মধ্যে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী তাদের দৃঢ় প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে নিখুঁত হামলা চালিয়ে পহেলগাঁওয়ের শোককে প্রতিশোধের জয়ে রূপান্তরিত করেছে। এই অভিযান, যা ‘অপারেশন সিন্দুর’ নামে পরিচিত, ভারতের শূন্য সহনশীলতার নীতির এক জ্বলন্ত প্রমাণ।বুধবার ভোরে ভারতীয় সেনা, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর সমন্বিত প্রচেষ্টায় পাকিস্তানের বাহাওয়ালপুর ও মুরিদকে এবং পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের মুজাফফরাবাদ-সহ নয়টি সন্ত্রাসী ঘাঁটিতে সুনির্দিষ্ট হামলা চালানো হয়। এই হামলায় জৈশ-এ-মোহাম্মদ এবং লস্কর-ই-তৈবার মতো নিষিদ্ধ সংগঠনের ঘাঁটিগুলি ধ্বংস করা হয়েছে। ভারত সরকারের বিবৃতি অনুসারে, এই অভিযান ছিল “ফোকাসড, পরিমিত এবং অ-উস্কানিমূলক,” যেখানে কোনো পাকিস্তানি সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করা হয়নি। এই সফল অভিযানের খবর ছড়িয়ে পড়তেই আসানসোলে খুশির জোয়ার বয়ে যায়। বুধবার সকালে আসানসোলের রবীন্দ্রভবনের সামনে শতাধিক স্থানীয় বাসিন্দা জাতীয় পতাকা হাতে সমবেত হন। সিঁদুর খেলে এবং উল্লাসে মেতে তারা ভারতীয় সেনাবাহিনীর এই সাহসী পদক্ষেপকে স্বাগত জানান। পথচলতি মানুষদের মধ্যে লাড্ডু বিতরণ করে তারা এই বিজয়ের মিষ্টি ভাগ করে নেন। এই উৎসবের মাঝে পহেলগাঁওয়ের শোক যেন এক নতুন আশার আলোয় রূপান্তরিত হয়।

স্থানীয় বাসিন্দা রমেশ সিং বলেন, “পহেলগাঁওয়ের ঘটনায় আমাদের হৃদয় ভেঙে গিয়েছিল। কিন্তু আজ আমাদের সেনাবাহিনী প্রমাণ করেছে যে ভারত কখনো অন্যায় সহ্য করে না। এই লাড্ডু আমাদের বিজয়ের মিষ্টি, আমাদের গর্বের প্রতীক।” আরেকজন বাসিন্দা মীনাক্ষী দেবী বলেন, “অপারেশন সিন্দুর নামটাই আমাদের হৃদয় ছুঁয়েছে। এটা আমাদের সেই স্ত্রীদের প্রতি সম্মান, যারা পহেলগাঁওয়ে তাদের স্বামীদের হারিয়েছেন।”
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজে এই অভিযানের নামকরণ করেছেন ‘অপারেশন সিন্দুর’, যা পহেলগাঁওয়ে স্বামীহারা নারীদের প্রতি শ্রদ্ধার প্রতীক। এই নামকরণে ভারতের মানবিক ও বীরত্বপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির সমন্বয় ঘটেছে। স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা থেকে সাধারণ মানুষ, সকলেই এই অভিযানের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। সোশ্যাল মিডিয়ায় ‘জয় হিন্দ’ ও ‘অপারেশন সিন্দুর’ হ্যাশট্যাগে ভরে গেছে, যেখানে আসানসোলের উল্লাসের ছবি ও ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।
পহেলগাঁওয়ের ঘটনা যেমন দেশের মানুষকে কাঁদিয়েছিল, তেমনি অপারেশন সিন্দুর তাদের মুখে হাসি ফুটিয়েছে। আসানসোলের রবীন্দ্রভবনের সামনে জাতীয় পতাকার সমারোহ, সিঁদুরের উৎসব, এবং মিষ্টির মধুরতা এই বার্তাই দিচ্ছে—ভারত শোকের মধ্যেও আশা খুঁজে নেয়, এবং ন্যায়ের জন্য সর্বদা প্রস্তুত। এই উল্লাস শুধু আসানসোলের নয়, গোটা ভারতের। জয় হিন্দ!

CATEGORIES

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus ( )