
চিত্তরঞ্জন রেল স্টেশনে দূর পাল্লার ট্রেনের থামার দাবি: রেল বোর্ডের কাছে শ্রমিক নেতার আবেদন
কৌশিক মুখার্জী: চিত্তরঞ্জন:-
পশ্চিমবঙ্গের চিত্তরঞ্জন রেল স্টেশনে দূরপাল্লার গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনের স্টপেজের দাবি নিয়ে এবার সরাসরি রেল বোর্ডের চেয়ারম্যানের দ্বারস্থ হয়েছেন শ্রমিক নেতা ইন্দ্রজিৎ সিং। গত ৬ মে তিনি ন্যাশনাল ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান রেলওয়েম্যান (এনএফআইআর)-এর সাধারণ সম্পাদকের মাধ্যমে এই দাবি লিখিতভাবে পেশ করেছেন। তাঁর আবেদনে হাওড়া-পাটনা বন্দে ভারত, হাওড়া-নিউ দিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেস, দুরন্ত এক্সপ্রেস-সহ মোট ১৮টি গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনের চিত্তরঞ্জনে থামার দাবি উত্থাপিত হয়েছে।
ইন্দ্রজিৎ সিং তাঁর আবেদনে উল্লেখ করেছেন, হাওড়া-দিল্লি প্রধান রেলপথে চলাচলকারী বেশ কিছু ট্রেন চিত্তরঞ্জন স্টেশনের ওপর দিয়ে যাতায়াত করলেও সেগুলো এখানে থামে না। এর মধ্যে রয়েছে টাটা-জয়নগর এক্সপ্রেস, রাউরকেলা-জয়নগর এক্সপ্রেস, কলকাতা-সীতামারি এক্সপ্রেস, কলকাতা-অমৃতসর এক্সপ্রেস, শালিমার-পাটনা দুরন্ত এক্সপ্রেস, হাওড়া-রক্সৌল এক্সপ্রেস, কলকাতা-পাটনা গরীব রথ, কলকাতা-গাজীপুর এক্সপ্রেস, অঙ্গ এক্সপ্রেস, হাওড়া-নিউ দিল্লি দুরন্ত এক কলকাতা-দ্বারভাঙ্গা এক্সপ্রেস, উপাসনা এক্সপ্রেস, কলকাতা-নাঙ্গল ড্যাম এক্সপ্রেস, অনন্যা এক্সপ্রেস, পুরী-জয়নগর এক্সপ্রেস এবং বেঙ্গালুরু-জশিডি এক্সপ্রেস। এই ট্রেনগুলির স্টপেজ চিত্তরঞ্জনে প্রদানের মাধ্যমে স্থানীয় বাসিন্দাদের যাতায়াতের সুবিধা বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি মনে করেন।
ইন্দ্রজিৎ সিং জানিয়েছেন, চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কস (সিএলডব্লু), যা এশিয়ার বৃহত্তম রেল কারখানা, এবং এর কর্মী ও তাঁদের পরিবার, পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডের বিস্তীর্ণ এলাকার হাজার হাজার মানুষ এই রেল স্টেশনের পরিষেবার ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু দূরপাল্লার গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনে যাতায়াতের জন্য তাঁদের ৩০ কিলোমিটার দূরে আসানসোল স্টেশনে যেতে হয়, যা সময়সাপেক্ষ এবং বহু ক্ষেত্রে অসুবিধাজনক। চিত্তরঞ্জন, রূপনারায়ণপুর, মিহিজাম, জামতাড়া এবং আশপাশের অঞ্চলের বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। তিনি আরও উল্লেখ করেন, হাওড়া-দিল্লি প্রধান রেলপথ চিত্তরঞ্জন স্টেশনের মধ্য দিয়ে গেলেও এই স্টেশনের যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত সুবিধা নেই।
“এই অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের অসুবিধা দূর করতে এবং তাঁদের যাতায়াতকে আরও সহজ ও নিরাপদ করতে দূরপাল্লার ট্রেনগুলির স্টপেজ চিত্তরঞ্জনে অত্যন্ত জরুরি। আমরা রেল বোর্ডের কাছে এই বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপের প্রত্যাশা করছি,” বলেন ইন্দ্রজিৎ সিং।
চিত্তরঞ্জনের এই দাবি স্থানীয় জনগণের মধ্যে ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে। এলাকাবাসী মনে করেন, এই স্টপেজ চালু হলে তাঁদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা এবং যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। রেল বোর্ড এই আবেদনের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত নেয়, তা নিয়ে এখন সবার দৃষ্টি কেন্দ্রীভূত। আগামী দিনে এই বিষয়ে রেল কর্তৃপক্ষের পদক্ষেপের দিকে নজর রাখছে চিত্তরঞ্জনবাসী।