
রূপনারায়ণপুরে মোবাইল চুরির পর সাইবার প্রতারণার শিকার এক ব্যক্তির লক্ষাধিক টাকা গায়েব
কৌশিক মুখার্জী: সালানপুর:-
চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানার প্রাক্তন কর্মী এবং রূপনারায়ণপুর পুলিশ ফাঁড়ি এলাকার মহাবীর কলোনির বাসিন্দা অরূপ ভট্টাচার্য এক ভয়ঙ্কর সাইবার অপরাধের শিকার হয়েছেন।গত ১ই জুন, রবিবার সকালে তিনি রূপনারায়ণপুর ডাবর মোড়ের সবজি বাজারে কেনাকাটায় গিয়েছিলেন। কিন্তু ফেরার সময় তিনি বুঝতে পারেন, তার পকেট থেকে মোবাইল ফোনটি চুরি হয়ে গেছে। ঘটনাটি বুঝতে পেরেই তিনি তৎক্ষণাৎ পদক্ষেপ নেন। সকাল ১১টার মধ্যে তিনি রূপনারায়ণপুর পুলিশ ফাঁড়িতে চুরির অভিযোগ জানান এবং বিএসএনএল কার্যালয়ে পৌঁছে তার সিম কার্ড বন্ধ করান। পাশাপাশি, পুরনো নম্বর ফিরে পেতে নতুন সিমের জন্য আবেদন করেন। বিএসএনএল কর্তৃপক্ষ তাকে জানায়, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নম্বরটি পুনরায় সক্রিয় হবে।কিন্তু এলাকায় মোবাইল চুরির ঘটনা কিছুটা কমলেও সম্প্রতি চোরের দল আবার সক্রিয় হয়ে উঠেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করছেন, পুলিশের কিছুটা শৈথিল্যের কারণেই এই অপরাধীরা নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অরূপ ভট্টাচার্যের ঘটনা এলাকায় নতুন করে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।৩রা জুন, সিমটি এখনও চালু না হওয়ায় অরূপ বাবু আবার বিএসএনএল কার্যালয়ে যান। সেখানে তাকে জানানো হয়, প্রযুক্তিগত সমস্যার কারণে সিমটি এখনও সক্রিয় হয়নি, তবে সেদিনই তা চালু হবে। এরপর তিনি তার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য জানতে ব্যাঙ্কে যান।পাশবই আপডেট করতেই তিনি হতচকিত হয়ে যান। তার তিনটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট, যার মধ্যে পেনশন অ্যাকাউন্টও রয়েছে, থেকে ধাপে ধাপে প্রায় ১লক্ষ ৭০ হাজার টাকা সরিয়ে নিয়েছে অজ্ঞাত সাইবার অপরাধীরা। এমনকি তার অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে ইউপিআই-এর মাধ্যমে মোবাইল রিচার্জসহ বিভিন্ন লেনদেনও করা হয়েছে।
অরূপ বাবু জানান, তার একটি অ্যাকাউন্টে এটিএম কার্ড বা অনলাইন লেনদেনের কোনো সুবিধা ছিল না, তবুও সেখান থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। ফোন বন্ধ থাকায় তার কাছে কোনো ওটিপি বা লেনদেনের সতর্কতা বার্তা আসেনি। এত দ্রুত সতর্কতা অবলম্বন করেও কীভাবে তার অ্যাকাউন্ট থেকে এত বড় অঙ্কের টাকা গায়েব হল, তা তার কাছে রহস্য।ঘটনার দিনই তিনি আসানসোল সাইবার ক্রাইম থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে বলে জানা গেছে। এই ঘটনায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত অরূপ ভট্টাচার্য জানান, তার স্ত্রী মারা গেছেন, মেয়ে অন্য শহরে থাকেন। একা বাড়িতে থাকা এই ব্যক্তি এখন গভীর হতাশায় ভুগছেন। তিনি পুলিশের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন, দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীদের শনাক্ত করে তার হারানো অর্থ ফেরত দেওয়া হোক। এই ঘটনা এলাকায় সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে, এবং স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলছেন পুলিশের নজরদারি আরো বাড়িয়ে এই অপরাধ রোধ করা যায় না কেন?