
মায়ের নামে গাছ,চিত্তরঞ্জনে বিশ্ব পরিবেশ দিবসে ভালোবাসার সবুজ উৎসব
কৌশিক মুখার্জী: চিত্তরঞ্জন:-
বিশ্ব পরিবেশ দিবসের পবিত্র মুহূর্তে পিএম শ্রী কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়, চিত্তরঞ্জন এক হৃদয়স্পর্শী ও অভিনব উদ্যোগের মাধ্যমে প্রকৃতি ও মাতৃত্বের এক অপূর্ব মেলবন্ধন ঘটিয়েছে। ‘মায়ের নামে একটি গাছ’ নামে এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি কেবল পরিবেশ সংরক্ষণের বার্তাই ছড়িয়ে দেয়নি, বরং মায়ের প্রতি সন্তানের গভীর ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাকে এক অনন্যভাবে প্রকাশ করেছে।
অধ্যক্ষ টেক ধারণীর নেতৃত্বে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে শিক্ষকমণ্ডলী ভারতী দেবী, নেহা নম্রতা আইন্দ, সাঁওতালি ভাষার সম্পদশালী শশীলতা সোরেন, তন্ময় সরকার, শুভেন্দু দাস, অভিভাবক এবং উৎসাহী ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি এই উৎসবকে আরও মহিমান্বিত করেছে। প্রায় ৬০ জন মা তাঁদের সন্তানদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই আনন্দঘন কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছেন, যা প্রকৃতি ও মানবতার মধ্যে এক অমোঘ সেতু রচনা করেছে।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পরিবেশ সংরক্ষণের তাৎপর্য এবং এ বছরের বিশ্ব পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য নিয়ে একটি প্রাণবন্ত আলোচনা হয়। অধ্যক্ষ তাঁর স্বাগত ভাষণে বলেন, “একটি গাছ কেবল অক্সিজেনের উৎস নয়, এটি ভালোবাসা, যত্ন ও দায়িত্বের প্রতীক। মায়ের নামে গাছ রোপণের মাধ্যমে আমরা প্রকৃতি ও মাতৃত্বের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশ করছি।” তাঁর এই বক্তব্য উপস্থিত সকলের মনে গভীর ছাপ ফেলে।
এরপর মায়েরা তাঁদের সন্তানদের সঙ্গে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপণ করেন। প্রতিটি গাছের পাশে একটি নামফলক স্থাপন করা হয়, যাতে লেখা থাকে সেই মায়ের নাম, যাঁর উদ্দেশ্যে গাছটি রোপিত হয়েছে। এই আবেগময় উৎসর্গ মুহূর্তগুলি উপস্থিত সকলের হৃদয়ে এক অমলিন স্মৃতি হয়ে থাকবে। ছাত্রছাত্রীরা তাদের মায়েদের হাত ধরে গাছ রোপণের এই প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে পরিবেশের প্রতি দায়িত্ববোধের পাশাপাশি মায়ের প্রতি ভালোবাসা ও সম্মান প্রকাশের এক অমূল্য সুযোগ লাভ করেছে।
অনুষ্ঠানের সমাপ্তিতে সকলে মিলে রোপিত গাছগুলির যত্ন নেওয়ার এবং একটি পরিচ্ছন্ন, সবুজ পৃথিবী গড়ে তোলার জন্য অবিরাম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার শপথ নেন। এই শপথ ছিল পরিবেশের প্রতি তাঁদের দৃঢ় অঙ্গীকারের এক প্রতিফলন।
‘মায়ের নামে একটি গাছ’ কর্মসূচি কেবল পরিবেশ সংরক্ষণের প্রতি আমাদের দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়নি, বরং মায়ের অক্লান্ত ভালোবাসা ও ত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধার এক অমর প্রকাশ ঘটিয়েছে। চিত্তরঞ্জনের এই উদ্যোগ একটি সবুজ ভবিষ্যতের স্বপ্ন বুনেছে, যা প্রকৃতি ও মানবতার জন্য একটি উজ্জ্বল পথের সন্ধান দেবে।