মরুমালী

নীহার চক্রবর্তী (বেথুয়াডহরি, নদীয়া)

পাঁচ ইঞ্চি ইঁটের গাঁথনির ওপর দিয়ে সাবলীলভাবে হেঁটে গেল মধ্য-তরুণ মিস্ত্রী।
আমি তো দেখে ভয়ে মরি।
ভয়ে একবার চোখ বুজেও ফেললাম।
পরে তাকে বললাম, ‘অমন করে যেতে ভয় লাগে না তোমার?’

সে খানিক সময় ভাবল।
তারপর অমায়িক-হেসে জবাব দিল, ‘কি যে বলেন, স্যর। এ তো ভারি দোতলা। সবচেয়ে বড় কথা জীবনের টানে, জীবনের ঘ্রাণে আমাদের চলতে হয়। বাঁচার সব রসদ আমাদের নির্ভয়ে।’
আমি শুনে অবাক। কেমন সুন্দর কথা বলল! এতদিনেও জীবনের অর্থটাই তো বুঝতে পারলাম না। ঘ্রাণ তো দূরের কথা।

মনে পড়ে গেল দুদিন আগে সে বলেছিল, ‘কলেজ ছাড়িয়েও পড়াশোনা করেছি, স্যর। চেষ্টা কম করিনি চাকরির। নাহ, হল আর কই। পরিবারের কথা লেগে পড়লাম আপনাদের কিছু গড়ে দেওয়ার কাজে।’
অদ্ভুতভাবে তখন তার মুখ দিয়ে শোনা গিয়েছিল–
‘সকলের তরে সকলের আমরা
প্রত্যেকে আমরা পরের তরে।’

কবি যাই বলুক, আদৌ কি তাই? কে জানে।

CATEGORIES

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus ( )