হৃদয়ের গান
নীহার চক্রবর্তী (বেথুয়াডহরি, নদীয়া)

ডাক্তারবাবু বর।
তরুণী হাসতে হাসতে একেবারে লাল টুকটুকে হয়ে বলল, ‘ডাক্তারবাবুর আগাপাস্তলা সব বুঝেছি। শুধু বাদ লেখাটা। কতবার বলেছি। হ্যাঁ, সেই মুহূর্তেও বলেছি। ভেবেছি এবার যদি লেখাটা স্পষ্ট করে। ঘোরের মধ্যে বলে বটে। পরে কিন্তু শোনে না। দেখবেন ডাক্তারবাবুর লেখা?’
নিদাঘ দুপুরের বাইরের উষ্ণতা কোথায় উড়ে গেল তার মুখে রোমান্সবেলার কথা শুনে। রসিকা বটে।
তাই খুব আগ্রহের সঙ্গে বললাম, ‘দেখি, দেখি একটু।’
তা তরুণী দেখাল। দেখে আমি হাঁ। কিচ্ছুটি বুঝলাম না। কী লিখেছে কে জানে।
তাকে তখন অম্লান-হেসে বললাম, ‘বাদ দিন। নামী ডাক্তারবাবু বলে কথা। অত ধরতে নেই। ফার্মেসি তো বেশ বুঝে যায়। তাহলেই হল।’
সহসা খিলখিল করে হেসে উঠে সে বলে বসল, ‘ফার্মেসির সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ আছে কি না কে জানে। আমাকে তো বলে না। হতেও পারে, তাই না?’
আমারও এ নিয়ে প্রশ্ন ছিল। অনেকের আছে। তা’বলে ঘরের মানুষ হাটে হাঁড়ি ভাঙবে? এ হতে পারে না।
আমি হাসির তুড়ি দিয়ে উড়িয়ে দিলাম অমন বিদঘুটে প্রসঙ্গ।
স্মিত-হেসে তাকে বললাম, ‘হার্টে একটু প্রব্লেম হচ্ছে। এ মাসেই ডাক্তারবাবুকে দেখাব ভাবছি।’
বেশ সচকিত হয়ে তরুণী তখন বলল, ‘দেরি করবেন না, প্লিজ। এসব ফেলে রাখার ব্যাপার না। এ ব্যাপারে উনি সিদ্ধহস্ত।’
বুঝে গেলাম হাতের লেখা যাই হোক, ডাক্তারবাবু তার শিরোদেশে অটল হিমালয়। এখানে আর কারও সুযোগ পাওয়ার উপায় নেই।