
গুসকরা মহাবিদ্যালয়ে পালিত হলো আন্তর্জাতিক যোগা দিবস
জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, গুসকরা, পূর্ব বর্ধমান -: বর্তমান পরিস্থিতি দেখে মনে হয় জন্মের সময় বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মত সুগার, থাইরয়েড, ব্লাড প্রেসার, ক্লোস্টেরল, ওবেসিটি ইত্যাদিকে সঙ্গী করেই যেন মানুষ পৃথিবীতে আসছে। বিভিন্ন ওষুধের নাম উঠছে মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের তালিকায়। সুস্থভাবে বাঁচার তাগিদে মানুষ ওষুধের বিকল্প পথ হিসাবে বেছে নিয়েছে 'যোগা' বা 'ইয়োগা'। প্রাচীন যুগে 'যোগা'র হাত ধরেই ভারতের মুনি-ঋষিরা দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের সুস্থ রেখেছিলেন। 'যোগা' হলো একটি প্রাচীন ভারতীয় ঐতিহ্য যা দেহ, মন ও আত্মাকে সুস্থ রাখে। বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ভঙ্গি, শ্বাস প্রশ্বাসের কৌশল ও ধ্যানের মাধ্যমে যোগা সম্পন্ন করা হয়। এর প্রকৃত অর্থ হলো 'চেতনা' এবং সাধারণ অর্থ 'মিলন'। দেহ, মন ও শক্তি - এই তিনটি জিনিসের সমন্বয়ে আমাদের শরীর চলে। যোগা এই তিনটির মধ্যে সমন্বয় সাধন করে, মিলন ঘটায়। নিয়মিত যোগচর্চার মাধ্যমে অসুস্থ শরীর রোগমুক্ত ও সুস্থ হয়। সুস্থ শরীর আরও সতেজ হয়ে ওঠে। চঞ্চল ও দুশ্চিন্তাগ্রস্থ মন শান্ত হতে থাকে। তাইতো রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গড়ে উঠেছে অসংখ্য যোগা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। বহু শিক্ষার্থী নিজেদের সুস্থ রাখার তাগিদে সেখানে নিয়মিত যোগা চর্চা করেন। যোগার বিভিন্ন উপকারিতা লক্ষ্য করে ২০১৪ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২১ শে জুন তারিখটি 'আন্তর্জাতিক যোগা দিবস' হিসেবে ঘোষণা করার জন্য জাতিসংঘকে পরামর্শ দেন। জাতিসংঘ সহ বিশ্বের ১৭৭ টি দেশ এই প্রস্তাব মেনে নেয়। ২০১৫ সালের ২১ শে জুন প্রথমবার বিশ্বের বিভিন্ন দেশে 'আন্তর্জাতিক যোগা দিবস' পালিত হয়। গুসকরা মহাবিদ্যালয়ের এনএসএস ও এনসিসি বিভাগের উদ্যোগে এবং রোটারী ক্লাব, স্টার্ট আপ ফাউন্ডেশন, ডেকাথলন, সমায়ু ও হুলাডেকের সক্রিয় সহযোগিতায় যোগার নানান শারীরিক কসরত সহযোগে একটি ছোট্ট অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গুসকরা মহাবিদ্যালয়ে পালিত হলো ১১ তম আন্তর্জাতিক যোগা দিবস। মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা ছাড়াও যোগায় অংশগ্রহণ করেন স্থানীয় পিপি ইনসটিটিউশন, বালিকা বিদ্যালয় ও বাগানপাড়ার ছাত্রছাত্রী সহ উপস্থিত বিশিষ্ট ব্যক্তিরা। ক্রীড়া বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মণীষা মণ্ডল শারীরিক কসরতের অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন। এছাড়া এদিন ফিতে কেটে মহাবিদ্যালয়ের যোগা কেন্দ্রের দ্বারোঘাটন করেন গুসকরা পুরসভার চেয়ারম্যান কুশল মুখার্জ্জী। এর আগে উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে অধ্যক্ষ সহ অন্যান্য উপস্থিত ব্যক্তিদের যথাযোগ্য মর্যাদা সহকারে বরণ করা হয়। মহাবিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের অধ্যাপিকা মনামী চোংদার পরিবেশিত
সঙ্গীতের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যোগার প্রাথমিক কসরতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। স্বাগত ভাষণে মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ড. সুদীপ চ্যাটার্জি আজকের দিনে যোগার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন এবং নিজদের শারীরিক ও মানসিক দিক দিয়ে সুস্থ রাখার জন্য প্রত্যেককে নিয়মিত যোগা অনুশীলনের জন্য আহ্বান জানান। প্রসঙ্গত তিনিও যোগার শারীরিক কসরতে অংশগ্রহণ করেন। গুসকরা মহাবিদ্যালয়ের উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে পুরপ্রধান বলেন - আশাকরি এই যোগা কেন্দ্রে ছাত্রছাত্রীরা নিয়মিত যোগা অনুশীলন করবে এবং শারীরিক ও মানসিক দিক দিয়ে শক্তিশালী হয়ে উঠবে। এরফলে মোবাইলের অশুভ প্রভাব থেকে তারা অনেকটাই দূরে থাকতে পারবে।