প্রজন্ম ক্ষয়
পপি সূত্রধর (বাংলাদেশ)

সম্মানীয় অভিভাবক।
আমাকে কোথায় খুঁজছেন?
আপনার স্বপ্নে সাজানো সুন্দর ভবিষ্যৎ প্রজন্মে?
না আমাকে সেখানে পাবেন না।
আমাকে পাবেন কিছু বিদেশি গেমসের ফিচারে,
আমাকে পাবেন কিছু বিকৃত বিষাক্ত আচারে,
আমি তীক্ষ্ণ মেজাজে এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছি
নিয়ন আলোয় ভেসে ওঠা এক ভার্চুয়াল যুদ্ধে।
আমাকে পাবেন কোনো অন্ধকার মাতাল জগতে,
যেখানে দাঁড়ালে ভবিষ্যৎ ধোঁয়াটে দেখায়।
আমি বিকলাঙ্গ জাতির ভীরে হারিয়ে গেছি।
আমার বিভৎস ধ্বংস চিৎকার আপনার কানে কি পৌঁছায়?
আমি কোথায় থাকি?
আমি থাকি কোনো নরহিংস্রের তীব্র লালসায়,
আমি থাকি অতৃপ্ত রসনায়,
চোখে মুখে অসহায়ত্ব জড়িয়ে দাঁড়িয়ে থাকি
কোনো বিচার বিভাগের দরজায়।
অথবা কিছু ভঙ্গুর নীতির চাদর গায়ে
জড়িয়ে চলে যাই
কোনো কবর কিংবা শ্মশানে।
আমার ভয়ার্ত চোখগুলো কি আপনার স্বপ্নে ভাসে?
আমি কে?
আমি বিশ্বায়নে জন্ম নেয়া জেনারেশন জি,
আমি জেনারেশন আলফা,
আমি ধ্বংসের দীর্ঘনিঃশ্বাস।
আমি কোনো আছিয়া কিংবা স্বর্ণা দাস।
আমি কোনো আয়ান কিংবা রায়হান।
আমি কোনো শ্রমিক মুকুলে ঝরে যাওয়া প্রাণ।
আমিই রোজ ক্ষয়ে যাওয়া এক প্রজন্ম,
এখনও কি রঙীন স্বপ্ন দেখছেন আমার জন্য?
আমাকে কে চেনে?
আমাকে চেনে সমগ্র জাতির সাময়িক সচেতন মগজ,
আমাকে চেনে নিঃস্পাপ শিশুর মৃত্যু খবর ছাপা কাগজ।
আমাকে চেনে কাঁচা ফুসফুসে যাওয়া নিকোটিনের ধোঁয়া।
কিংবা ডাস্টবিনে মাথা থেতলে পড়ে থাকা কোনো এক শিশু।
আমাকে যদি রক্ষা করতে চান ,
আমাকে রক্ষা করুন কোনো প্রতিবাদী রক্তবিহীন হাতে,
আমাকে রক্ষা করুন সতেজ কোনো খেলার মাঠে।
আমাকে রক্ষা করুন কোনো শিক্ষক, কঠোরতার সাথে।
আমাকে রক্ষা করুন কয়েকটি বই কিংবা পাঠাগারে।
আমাকে রক্ষা করুন সুষ্ঠু সামাজিকীকরণে ,
আমাকে রক্ষা করুন উন্নত চিন্তার ধরনে।
আমাকে রক্ষা করুন কোনো কঠোর আইনের দেশে।
আমাকে রক্ষা করতে ভেঙে ফেলুন মস্তিষ্কে জমা ডাস্টবিন,
মোবাইল কেড়ে নিয়ে স্বপ্ন দেখান, হাতে বই ধরিয়ে দিন।
তবেই আমি ফিরে আসবো আপনার স্বপ্নের ভবিষ্যৎ হয়ে।

