
ট্রাফিক গার্ডের পাশে বর্ধমানের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা
জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, পূর্ব বর্ধমান:- গতকালের বৃষ্টি জনিত কারণে তাপমাত্রা সামান্য কমলেও পক্ষকাল ব্যাপী তীব্র গরম ও তাপপ্রবাহ স্বাভাবিক জনজীবনকে ব্যাহত করে তোলে। চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে সাধারণ মানুষ নিজেদের কার্যত গৃহবন্দী করে ফেলে। একান্ত বাধ্য নাহলে কেউ বাড়ির বাইরে বের হচ্ছিল না। রাস্তাঘাটে বিরাজ করছিল মরুভূমির শূন্যতা। দেখলে মনে হবে হয়তো কার্ফু চলছে। কিন্তু ওদের কোনো রেহাই নাই। ওরা ট্রাফিক গার্ডে কর্মরত। শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা- রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের 'সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ' প্রকল্পকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে ওরাই বড় ভরসা। তাইতো সবরকম প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ওদের রাস্তায় দাঁড়িয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায়। ডিপার্টমেন্ট ওদের পাশে থাকলেও এবার ওদের পাশে এসে দাঁড়ালো বর্ধমান শহরের ভাঙাকুঠি এলাকার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। সংস্থাটির পক্ষ থেকে ৭ ই মে শহরের কর্মরত ট্রাফিক গার্ড, সাংবাদিক সহ বেশ কয়েকজন সাধারণ মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হলো ওআরএস ও টিফিন। গরমের সময় ওআরএস পেয়ে ট্রাফিক গার্ডের কর্মীরা খুব খুশি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্রাফিক গার্ডের জনৈক কর্মী বললেন - ডিপার্টমেন্ট সর্বদাই আমাদের পাশে আছে ঠিকই, কিন্তু যখন সাধারণ মানুষ ওআরএস এর প্যাকেট নিয়ে পাশে এসে দাঁড়ায় তখন কাজের জন্য বাড়তি উৎসাহ পাওয়া যায়। এগুলি বিতরণ করার সময় সংস্থার পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজকর্মী সুভাষ পোদ্দার, চেঙ্গিস খান, মনু সাউ, সেখ আম্বিয়া, আকাশ শর্মা, রোহিত গুপ্ত, মনোজ সাউ, রঞ্জিত সিং, পূজা সাউ, সভাপতি বাবলু সাহানি ও সম্পাদিকা অঞ্জু শর্মা সহ অন্যান্যরা। প্রসঙ্গত এবছর ১১ ই ফেব্রুয়ারি অঞ্জু দেবীর পুত্র আমনের জন্মদিন উপলক্ষ্যে গরীব ঘরের শিশুদের মানসিক 'শান্তি'র বার্তা দিতে সংস্থাটি গড়ে ওঠে। ইতিমধ্যে তারা 'কদম বাড়ায়ে' একদল শিশুর হাতে তুলে দিয়েছে বই, খাতা, পেনসিল সহ নানান শিক্ষা সামগ্রী। লক্ষ্য শিশুদের সম্পূর্ণ বিনা খরচে শিক্ষা দেওয়া ও সমাজের উপযুক্ত করে গড়ে তোলা। পাশাপাশি গত সাতদিন ধরে 'জলসত্র' খুলে ক্লান্ত পথচারী, বিভিন্ন গাড়ির চালক ও কর্মচারিদের হাতে তুলে দিয়েছে পানীয় জল। সম্পাদিকা অঞ্জু দেবী বললেন - আমরা এই সমাজের অংশ। আমাদের লক্ষ্য দুস্থ শিশুদের শিক্ষা দেওয়ার পাশাপাশি অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো। সীমিত আর্থিক সামর্থ্য নিয়ে আমরা আমাদের লক্ষ্য পূরণের চেষ্টা করে যাচ্ছি। আশাকরি আগামীদিনে সহৃদয় মানুষের সহযোগিতা আমাদের লক্ষ্য পূরণের পথে সহায়ক হয়ে উঠবে।