
নিখোঁজ ছেলেকে খুঁজতে গিয়ে উত্তরপ্রদেশ পুলিসের হাতে হেনস্থার শিকার মা,বাবার
তন্ময় মাহারা: মালদা:- নিখোঁজ ছেলেকে খুঁজতে গিয়ে উত্তরপ্রদেশ পুলিসের হাতে চরম হেনস্থার শিকারের অভিযোগ মানিকচকের ধরমপুরের অসহায় বাবা-মা। কানপুরের গঙ্গাঘাট বাস স্ট্যান্ড থেকে রেল স্টেশন যাওয়ার পথে নিখোঁজ যুবক ইন্দ্রনীল ঝা (২৮)। কানপুর রেলস্টেশন থেকেই ট্রেন ধরে বাড়ি ফেরার কথা ছিল। কিন্তু আজ এক মাসের বেশি অতিক্রম হলেও খোঁজ নেই বাড়ির একমাত্র ছেলের। ছেলেকে খুঁজতে মানিকচক থানা,মালদহ জেলা পুলিস এমনকি লালবাজারের ভবানীভবনেও অভিযোগ করেছেন পরিবারের সদস্যরা।পাশাপাশি কানপুরে ছেলের খোঁজে গেলে পুলিসি হয়রানির শিকার হতে হয় তাদের।নিখোঁজ যুবকের মায়ের অভিযোগ যোগীর রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন এক মায়ের আর্তনাদ শুনতে পাচ্ছে না তারা।মানিকচকের চৌকি মীরদাদপুর পঞ্চায়েতের ধরমপুর এলাকার বাসিন্দা, ইন্দ্রনীল ঝা(২৮)। বাবা সাধন ঝা পেশায় এক সেলসম্যান অন্যদিকে মা জয়শ্রী ঝা একজন আশা কর্মী। পরিবারের পক্ষ থেকে জানাগেছে নিখোঁজ যুবক কলকাতায় থেকে বিটেক পাশ করার পর চলতি বছরের মার্চ মাসে ইন্ডিয়ান অয়েলের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে হরিয়ানার পানিপথে কাজে যোগ দেন। বিগত উনিশে এপ্রিল শারীরিক অসুস্থতার জন্য তাকে ১৫ দিনের ছুটি দেওয়া হয়। বাড়ি আসার জন্য ট্রেনের টিকিট না পেয়ে পানিপথ থেকে কানপুর বাসে আসেন যুবকটি। কানপুরের গঙ্গাঘাট বাস স্ট্যান্ডে নেমে টোটোতে করে রেল স্টেশনের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। সেই সময়ই মায়ের সাথে শেষ বারের মত কথা, তারপর থেকেই নিখোঁজ যুবক। দুই দিন পর্যন্ত যুবকের সাথে কোন যোগাযোগ না হাওয়াই মানিকচক থানায় ছেলের নিখোঁজের অভিযোগও করেন। মানিকচক থানার থেকে ছেলের মোবাইলের লোকেশন খোঁজা হয়। দেখা যায় তার ব্যাংক থেকে বেশ কিছু টাকা কানপুরের এক মহিলার একাউন্টে পাঠানো হয়েছে। সেই সূত্র ধরেই ছেলের খোঁজে কানপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হয় বাবা-মা। কানপুরের গঙ্গাঘাট থানায় ছেলের নিখোঁজ এর অভিযোগ করতে গেলে প্রথমে অভিযোগই নিতে চাননি, পরে অবশ্য অভিযোগ নেন।নিজেরাই সিসিটিভি ফুটেজে জোগাড় করেন।সেখানে দেখা যায় টোটোতে করে যাচ্ছে ছেলে।সেই টোটো চালককে আটক করে গঙ্গা ঘাট পুলিস। চালক জেরায় স্বীকার করে তারা মাদক খাইয়ে যুবকের কাছে থাকা ফোন থেকে তার এক বন্ধুর সাথে মিশে তার মায়ের একাউন্টে সেই টাকা পাঠিয়েছে ।এবং যুবকটিকে অজ্ঞান অবস্থায় স্টেশনের পাশেই ফেলে দেয়। তাদের কাছ থেকে ছেলের ফোনও উদ্ধার করে পুলিস।তবে ছেলেকে খুঁজতে আর কোন কিছু করল না তারা।নিখোঁজ যুবকের মা জয়শ্রী ঝা কাঁদতে কাঁদতে বলেন,যোগী রাজ্যের পুলিস ঠিকমত কথাও বলে না আমাদের সাথে। টোটো চালক,ফোন উদ্ধার হল কিন্তু ছেলেকে পেতে সাহায্য করল না তারা।যদি আমার ছেলেকে না খুঁজে পাওয়া যায় তাহলে আমি মুখ্যমন্ত্রীর যোগী আদিত্যনাথের কাছে যাব, কিভাবে তার পুলিস কাজ করছে যে একমাত্র ছেলেকে তার মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিতে পারছে না?যুবক যুবকের বাবা সাধন ঝা বলেন, কানপুরের পুলিশের কাছে ছেলেকে ফিরে পেতে আমরা ভিক্ষে করেছি, তাদের পরিষ্কার কথা নির্বাচন চলছে এখন সম্ভব নয়। যোগী রাজ্যের পুলিস আমাদের সহায়তা করলে আমরা ছেলেকে ফিরে পেতাম। আমার একমাত্র সম্বল ছেলে কি নিয়ে বাঁচবো। মুখ্যমন্ত্রী আমাদের সাহায্য করুন।পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখা করেন CITU মালদা জেলা সম্পাদক দেবজ্যোতি সিনহা। দ্রুত পশ্চিমবঙ্গের সরকার ও উত্তর প্রদেশ সরকারকে উদ্যোগ নিয়ে নিখোঁজ যুবককে উদ্ধার করতে হবে বলে দাবি করেন তিনি