ওঠা-পড়ার গল্প

ওঠা-পড়ার গল্প

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী: ফাইনাল এক্সপোজার:- স্বাধীন ভারতে প্রথম সাধারণ নির্বাচন হয় ১৯৫২ সালে। তারপর দেখতে দেখতে নানা ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে সদ্য শেষ হয়েছে অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচন। ৪ ঠা জুন ভোটের ফল প্রকাশিত হবে। জাতীয় নির্বাচন কমিশন গত ১৬ ই মার্চ লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট ঘোষণা করার সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচনী বিধিনিষেধ শুরু হয়ে যায়। প্রথম দফার নির্বাচন শুরু হয় ১৯ শে এপ্রিল এবং শেষ দফার নির্বাচন শেষ হয় ১ লা জুন। ফল ঘোষণা হবে ৪ ঠা জুন। সবমিলিয়ে ৮১ দিন ব্যাপী এই নির্বাচন প্রক্রিয়া চলে। এর আগে বিভিন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষের উৎসাহ ও আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। উৎসবের মেজাজে তারা ভোট দিতে গেছে। এবারও তারা ভোট দিতে গেলেও অতীতের আবেগটা দেখা যায়নি। হতে পারে রাজনীতিবিদ ও রাজনৈতিক দলগুলোর উপর তাদের ভরসা ধীরে ধীরে কমে আসছে। যার জন্য তারা সেভাবে আর আগ্রহ দেখাচ্ছে না। দীর্ঘমেয়াদি নির্বাচন প্রক্রিয়া তাদের উৎসাহের পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। প্রায় তিন মাস ধরে কে আর ধৈর্য্য ধরে রাখবে! সবকিছুর একটা লিমিট আছে। তার উপর এবার ছিল মাত্রাতিরিক্ত গরম। সেটাও একটা কারণ। সাধারণ মানুষের উৎসাহ কম হলেও সম্ভবত এই প্রথম কোনো একটি নির্বাচনকে একদল রাজনীতিবিদ খুব 'সিরিয়াস' ভাবে গ্রহণ করেছে। তাদের আচরণ দেখে মনে হয়েছে এই নির্বাচনের ফলাফলের উপর তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নির্ভর করছে। এমনিতেই প্রতিবছর বয়স জনিত কারণে একদল প্রবীণ রাজনীতিবিদ রাজনীতির মঞ্চ থেকে অবসর নিতে বাধ্য হন এবং সেটা স্বাভাবিক। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি একদল অপেক্ষাকৃত তরুণ রাজনীতিবিদকে 'প্রাক্তন' করে দিতে পারে। যারা প্রাক্তন হওয়ার মুখে দাঁড়িয়ে আছেন তারা আরও দ্রুত প্রাক্তন হয়ে যাবেন। এবং এইরাজ্যে সেটা ঘটার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। যেমন ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের ফল বের হওয়ার পর অনেকেই অকালেই প্রাক্তন হয়ে গেছে। রাজনীতির কোনো আলোচনাতেই তাদের নাম আর শোনা যায়না। অথচ নির্বাচনের আগে এদের পেছনে সংবাদ মাধ্যমের প্রতিনিধিরা ছুটত। প্রাক্তনের তালিকায় কাদের নাম উঠছে সেটা দেখার জন্য মাত্র কয়েক ঘণ্টার অপেক্ষা। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ৪ ঠা জুন সকাল ১০ টা থেকেই মোটামুটি সেই ইঙ্গিত পাওয়া যাবে। কেউ কেউ নির্লজ্জের মত দলবদল করে অস্তিত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করবে। উল্টোদিকে রাজ্য রাজনীতিতে কারও কারও গুরুত্ব বাড়তে পারে। যারা সফল হবে দল ও সাধারণ মানুষ তাদের সমীহ করতে বাধ্য হবে। যতই পুলিশ প্রশাসনের দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের হাতে থাকুক না কেন এই রাজ্যে যাতে কোনোরকম অশান্তির সৃষ্টি না হয় তারজন্য প্রতিটি রাজনৈতিক দলকে সক্রিয় হতে হবে। আশাকরি সবার শুভবুদ্ধি জাগ্রত হবে।

CATEGORIES

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus (0 )