
রাজধর্ম পালন করুক মুখ্যমন্ত্রী এবং দায়িত্ব সচেতনতার পরিচয় দিক রাজনৈতিক দলগুলো
জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী: ফাইনাল এক্সপোজার:- যেকোনো রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা পুলিশ মন্ত্রীর। রাজ্যের স্বার্থে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া উচিত সমস্ত বিরোধীদলের।
জনগণের প্রতি শাসকদলের দায়বদ্ধতা বেশি হলেও অন্য দলগুলো তাদের দায়িত্ব অস্বীকার করতে পারেনা। সবাই যদি নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করে তবেই রাজ্যের প্রতিটি মানুষ শান্তিতে থাকতে পারবে। ২০১৯ এর লোকসভা ভোটে এইরাজ্যে অপ্রত্যাশিতভাবে ১৮ টা আসন পাওয়ার পর ব্যারাকপুরের বিভিন্ন এলাকায় চলে হাড়হিম করা সন্ত্রাস। একইভাবে ২০২১ এর বিধানসভা ভোটের ফল বের হওয়ার দিন বিকেল থেকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়েছিল সন্ত্রাস। ২০২৪ এর লোকসভা ভোটের ফল বের হওয়ার পর, আগের থেকে মাত্রা কম হলেও, সন্ত্রাসের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। কোথাও হুমকি দিয়ে নাকি দোকান বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে, কোথাও বা জোর করে টাকা আদায় করা হচ্ছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। আজও হয়তো আক্রান্তরা আতঙ্কে আঁতকে ওঠে। শেষ দু'দফায় হাল্কা অভিযোগ উঠলেও এবারের ভোট ছিল সম্পূর্ণ অভিযোগ মুক্ত। ভোট চলাকালীন কোনো রাজনৈতিক দল কোনো অভিযোগ করেনি। যদিও ফল বের হওয়ার পর বিরোধী দলনেতা রুটিন মাফিক সন্ত্রাসের পরিবেশের কথা বলেছেন। ওটা অবশ্য নিজের ব্যর্থতা ঢাকার জন্য। এখানেই পরীক্ষা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জ্জীর। তার উপর সাধারণ মানুষের প্রচুর আস্থা। বিজেপির সর্বগ্রাসী আক্রমণ সামলে তৃণমূল লোকসভা ভোটে এইরাজ্যে সবচেয়ে বেশি আসন লাভ করেছে। সাধারণ মানুষের আস্থার মর্যাদা দিয়ে সঙ্কীর্ণ দলীয় মুখ্যমন্ত্রীর কানাগলি থেকে বেরিয়ে সন্ত্রাস দমনের জন্য পুলিশকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া উচিত। মাাথায় রাখতে হবে ইতিমধ্যে হাইকোর্ট পদক্ষেপ শুরু করে দিয়েছে। দলের পক্ষ থেকে অভিষেককেও সদর্থক ভূমিকা নিতে হবে। দলের উচ্ছৃঙ্খল কর্মীদের সংযত করার দায়িত্ব তার। নাহলে তার কঠোর পরিশ্রম প্রশ্নের মুখে পড়ে যাবে এবং ভবিষ্যতে দলের জন্য কোনো সুখবর বয়ে আনবেনা। তবে শুধু শাসকদল তৃণমূল নয়, বিরোধী দলগুলো তাদের দায়িত্ব অস্বীকার করতে পারেনা। বেশ কিছু জায়গা থেকে তাদের পক্ষ থেকেও সন্ত্রাসের অভিযোগ সামনে আসছে। পারস্পরিক দোষারোপের পরিবর্তে দরকার মানুষের মনে আস্থা ফিরিয়ে আনা। আশা করা যায় কঠোর প্রশাসনিক ও দলীয় পদক্ষেপ এবং বিরোধী দলগুলোর সদিচ্ছা এই রাজ্যকে হিংসা মুক্ত রাজ্যে পরিণত করবে।