
একমুঠো ভালোবাসা
সোমা নায়ক (যাদবপুর)
সেই যে সেবার,
তুমুল বৃষ্টিতে ভিজতে ভিজতে
একটা কদমের চারা পুঁতে দিলাম কাদায়,
উঠোন জুড়ে বসিয়ে দিলাম অপটু হাতের বেড়া।
শত ব্যস্ততার মাঝেও তীক্ষ্ণ চোখে লক্ষ্য রাখলাম চারদিক।
সব দেখে শুনে ঠাম্মা তো একদিন বলেই ফেলল, এই হলো গিয়ে ভালোবাসা,
ওকে আগলে রাখিস তোরা, একটু আধটু যত্ন করিস,
নইলে আর কি,
প্রাণ ফুরোতে সময় লাগে না বেশি।
সেই কদম গাছটি –
কত সহজে কত অচেনা অজানা লোককে
আমার ঠিকানা চেনায় এখন।
পথ চলতি মানুষের ছায়া হয়ে
নুইয়ে দেয় ডাল
ফুল ফলে সুগন্ধি চেনায়, মায়া বাড়ায়।
ঠাম্মা বলে, ভালোবাসায় কীই না হয়।
ক’দিন হলো, মন মেজাজ ভালো নেই।
মাপ পরিমাপ হয়ে গেছে।
ভাগ বাঁটোয়ারা হয়ে যাওয়ার পর
কদম গাছের ভুঁইটা এখন অন্য শরিকের।
তারা কদম চায় না,
বৃষ্টি কালের কদমতলাটা বড্ড নোংরা,
সেখানে পা রাখাই দায়।
কেটে ফেলতে হবে গাছ। মুছে দিতে হবে অস্তিত্ব।
বাঁধানো মেঝেতে গাছের জন্ম হয় না।
ঠাম্মা বিড়বিড়িয়ে ওঠে,
স্বার্থ… স্বার্থ
ভালোবাসায় সবকিছু হয় না,
ভালোবাসায় আসলে কিচ্ছু হয় না
আমার দীর্ঘশ্বাস কদমের গা ছুঁলে
সে কৃতজ্ঞ হয়, পাপড়ি ঝরায়।
আমি যেন স্পষ্ট শুনতে পাই –
আমার কদম বলছে আমায়,
একমুঠো ভালোবাসা, তোমার জন্য শুধু…