বৃষ্টিতে ভেসে গেল দোকান, নিঃস্ব মঙ্গলকোটের যুবক

বৃষ্টিতে ভেসে গেল দোকান, নিঃস্ব মঙ্গলকোটের যুবক

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, মঙ্গলকোট, পূর্ব বর্ধমান:- শ্রাবণ মাসের মাঝামাঝি পার হয়ে গেলেও দক্ষিণবঙ্গে তখনো বৃষ্টির দেখা নাই। চাষীদের মাথায় হাত। পানীয় জলের সমস্যা দেখা যাচ্ছে। সব মিলিয়ে খরার আশঙ্কা যখন চেপে বসেছে ঠিক তখনই গত কয়েক দিন ধরে মেঘ ভাঙা বৃষ্টিতে ভেসে গেল চারপাশ। সঙ্গে ভাসিয়ে নিয়ে গেল এক বেকার যুবকের সংসারের সবার মুখে হাসি ফোটানোর স্বপ্নকে। পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের দীর্ঘসূয়া গ্রামের বাসিন্দা বছর ত্রিশের চিন্ময় ভট্টাচার্য্য। বাড়িতে আছে বাবা, মা, স্ত্রী ও বছর দু'য়েকের একমাত্র শিশু সন্তান। পৈত্রিক দেড় বিঘা জমি সম্বল। চাকরি না পেয়ে বছর তিনেক আগে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে গ্রামের মধ্যেই চিন্ময় একটি মুদিখানা দোকান শুরু করে। মহাজনরা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। দোকানের জন্য আরও কিছু ঋণ হয়। গ্রামের মধ্যে দোকান হলেও মানুষের প্রয়োজনীয় সব ধরনের মালপত্র সে রাখত। দোকানে নিজেদের প্রয়োজনীয় নিত্য দ্রব্য পাওয়ার জন্য শুধু নিজের গ্রামের নয় পার্শ্ববর্তী গ্রামের বাসিন্দারাও চিন্ময়ের দোকানে ভিড় করত। দোকানে ১৫-২০ লক্ষ টাকার জিনিসপত্র রাখতে হত। অল্প সময়ের মধ্যে দোকানের প্রসার জমে যায়। কিন্তু গত কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টির জন্য তার দোকানের মধ্যে জল ঢুকে যায়। চেষ্টা করেও রাতের অন্ধকারে সব মালপত্র নিরাপদ উচ্চতায় সে সরাতে পারেনি। চোখের সামনে পোস্ত, চিনি থেকে শুরু করে একের পর জিনিসপত্র জলে নষ্ট হতে থাকে। মানসিক দিক দিয়ে ভেঙে পড়া চিন্ময় এখনো ক্ষতির হিসাব করে উঠতে না পারলেও তার নিকট আত্মীয়দের আশঙ্কা ক্ষতির পরিমাণ কমপক্ষে ৮-১০ লক্ষ টাকা। এই পরিস্থিতিতে কথা বলার মত মানসিক অবস্থা তার নাই। তার স্ত্রী সহেলী দেবী বললেন, বিপুল ঋণ করে আমার স্বামী এই দোকানটি চালু করে। এরপর কীভাবে সংসার চলবে, ঋণই বা কীভাবে পরিশোধ হবে? এদিকে সামনে দুর্গাপুজো। সেখানে প্রচুর খরচ। সবমিলিয়ে আমার স্বামী খুবই দুশ্চিন্তায় আছেন। উদাসীন ভাবে তিনি বললেন - আমার স্বামী তো ব্যাংকের ঋণের কিস্তি নিয়মিত মিটিয়ে দেন। কেন্দ্র সরকার কি পারেনা আমার স্বামীর ব্যাংকের ঋণ মকুব করে দিতে? চিন্ময়ের বাবা করুনাময় বাবু বললেন - দয়া করে সরকার আমাদের প্রতি একটু করুণা করুক। কেন্দ্র সরকারের উত্তরের অপেক্ষায় দীর্ঘসূয়ার ভট্টাচার্য্য পরিবার।

CATEGORIES

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus (0 )