
প্রশাসনিক ব্যর্থতা বনাম নৈতিক অবক্ষয়
বিশেষ সংবাদদাতা: ফাইনাল এক্সপোজার:-
কোথাও দাদুর হাতে প্রতিবেশী শিশুকন্যা, ছেলের হাতে জন্মদাত্রী, জন্মদাতার হাতে আত্মজা, শিক্ষকের হাতে ছাত্রী, বোন তার আপন ভাইয়ের হাতে, শালিকা জামাইবাবুর হাতে, ডাক্তারের হাতে নার্স, পুরুষ সহকর্মীর হাতে মহিলা সহকর্মী, প্রেমিকের হাতে প্রেমিকা, জনপ্রতিনিধিদের হাতে সাধারণ মানুষ, মালিকের হাতে পরিচারিকি নিগৃহীতা হচ্ছে। তালিকাটা দীর্ঘ হতেই থাকবে।সম্প্রতি রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের হাতে দপ্তরের মহিলা কর্মী নিগ্রহের অভিযোগ সামনে এসেছে। প্রতিদিন সংবাদ মাধ্যমের পাতায় এইসব খবর ভেসে আসছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই নিকটজনের হাতে এইসব ঘটনা ঘটছে। পাশাপাশি রাস্তাঘাটে অপরিচিতের হাতেও নিগ্রহের ঘটনা ঘটছে। পবিত্র সম্পর্কগুলো আজ কলুষিত, ধূলোয় পড়ে গড়াগড়ি খাচ্ছে। বিশ্বাসের মৃত্যু ঘটছে। অবিশ্বাসের কালো মেঘ সমাজকে ঘিরে ফেলেছে। অতীতে মাঝে মাঝে এইসব ঘটনা সামনে এলেও ওগুলো বিচ্ছিন্ন হিসাবে গণ্য করা হতো। আজ যেন এগুলো স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। এর দায় কার? চারদেওয়ালের বাইরে কোনো ঘটনা ঘটলে অবশ্যই তার দায়ভার প্রশাসনকে নিতেই হবে। অপরাধী শাসকদলের সঙ্গে যুক্ত থাকলে ঘটনা সম্পর্কে প্রশাসন যথেষ্ট উদাসীন থাকে। সহজে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে চায়না। বিরোধীদলগুলোও নিজ দলের সঙ্গে যুক্ত অপরাধীদের রক্ষা করার চেষ্টা করে। অপরাধ দমন করার ক্ষেত্রে কোনো দলকেই সক্রিয় হতে দ্যাখা যায়না। সাপ-লুডো খেলার মত শাসক-বিরোধী একে অপরের দিকে আঙুল তুলতে ব্যস্ত থাকে। নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে সমগ্র দেশের ঘটনাবলীর দিকে নজর দিলে এই তথ্যই সামনে আসবে। তাদের খেলার শিকার হয় সাধারণ মানুষ। কিন্তু চারদেওয়ালের মধ্যে ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটলে তার দায় কার? অভিভাবকরা কি সেই দায় নিতে চাইবে? নিজের সন্তানকে রক্ষা করার তাগিদে তারা তখন ব্যস্ত হয়ে পড়বে। ঘটনার সত্যতা জানার চেষ্টা করবেনা। আঙুল তুলবে সমাজের দিকে। মাথায় থাকেনা সমাজ আমাদেরই তৈরি। প্রশাসনের দিকে আঙুল তোলার সঙ্গে সঙ্গে সমাজের প্রতিটি স্তরের নৈতিক অবক্ষয়ের দায় যতক্ষণ না আমরা নিচ্ছি ততক্ষণ আরজি করের মত ঘটনা ঘটতেই থাকবে। দিনের শেষে সমস্ত কষ্ট সংশ্লিষ্ট পরিবারকেই ভোগ করতে হবে।