
চিনা বাল্বের কারণে কদর কমেছে মাটির প্রদীপের, তবুও আশাবাদী মৃৎশিল্পীরা
বাইজিদ মণ্ডল: ডায়মন্ড হারবার:– আপামর বাঙালী আলোর রোশনাইয়ের উৎসব দীপাবলি উৎসব তথা কালীপুজোর আনন্দে ঝলমলিয়ে উঠেছে সারা দেশ সহ রাজ্য। চলতি মাসের ৩১ অক্টোবর ঘোর অমাবস্যায় অন্ধকারে আলোক জ্বেলে ঝকঝকে করতে আবির্ভূত হয় এই দিনে। কিন্তু যাঁদের মাটির প্রদীপে ঝলমল করে বা করেছে উৎসবের আঙিনা, সেই মৃৎশিল্পীদের ঘরেই এখন অন্ধকার। কারণ, বাজারে চিনা বাল্ব ও নানান বাহারি আলোর টুনি বাল্বের জেরে বর্তমানে কালীপুজোয় মাটির প্রদীপের কদর অনেকটা কমে গেছে,অর্থাৎ বলার বাহুল্য মাটির প্রদীপ শেষের দিকে। আর তার জন্য সৌজন্যতা রাখতে বৈদ্যুতিক মোমবাতি, টুনি লাইট প্রভৃতি এসেছে বাজারে। আগে কালীপুজো এলেই ঘর আলো করতে মাটির প্রদীপের চাহিদাই থাকত অনেকগুণ বেশি। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে গৃহস্থরা ঝুঁকেছেন তুলনায় সস্তা এবং বাহারি বৈদ্যুতিক আলোর দিকে। এই পরিস্থিতিতে কালীপুজোর মুখে দুঃশ্চিন্তার মুখে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ডায়মন্ড হারবার এলাকার কুমোররা। মাটির প্রদীপের কদর কমতে থাকায় এই কাজ ছেড়ে অনেকেই এখন অন্য পেশার দিকে ঝুঁকছেন।আলোর উৎসব তথা দীপাবলীতে ক্রমশ হারিয়ে যেতে বসেছে মাটির প্রদীপের আলো। তবে প্রদীপের চাহিদা কমলেও হাল ছাড়েননি জেলার অনেক মৃৎশিল্পীরা। সারা রাজ্য জুড়েই মৃৎশিল্পীরা পুজোর নানা উপকরণের সঙ্গে মাটির তৈরি প্রদীপও তৈরি করে আসছেন বংশ পরম্পরায়। কিন্তু বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ধরনের আধুনিক বৈদ্যুতিক বাতি বাজারে চলে আসায় প্রাচীন সেই মাটির প্রদীপ হারিয়ে যেতে বসেছে এই দীপাবলি উৎসব থেকে। কিন্তু বাজারে সেই প্রদীপের কম চাহিদা থাকায় প্রায় বন্ধের মুখে এই শিল্প। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ডায়মন্ড হারবার এলাকার বিভিন্ন গ্রামের বহু কুমোর পরিবার আগে এই পেশার সঙ্গে পেশাদারী ভাবে যুক্ত ছিল এখন সেটা অনেকটা কমে দাঁড়িয়েছে। মৃৎশিল্পীরা দীপাবলিকে সামনে রেখে ব্যস্ত থাকে নানা ধরনের প্রদীপ তৈরি করতে। তবে বেশ কিছু মৃৎশিল্পীর পাশাপাশি বাসুল ডাঙ্গা হাট এলাকায় কুমোর পাড়ার মৃৎশিল্পীর গলায় আক্ষেপের সুর। তিনি বলেন,আজকালকার ডিজিটাল যুগে যে হারে চায়না লাইট, টুনি বাল্ব ও নানা ধরনে এলইডি লাইট এসেছে বাজারে, সেই তুলনায় হাতে গড়া মাটির প্রদীপের বিক্রয় কমেছে, কমেছে তার কদর ও। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে মাটি ও খড়ির দামও বেড়েছে, কিন্তু প্রদীপের দাম বাড়ছে না,জার কারণে এতে কোনও রকম খাওয়া খরচটা ওঠে। গত কয়েক বছর মাটির প্রদীপ এর তেমনটা দাম ও চাহিদা নেই,কিন্তু তার উপর এবছর গদের উপর বিষ ফোঁরা। ভারী বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক দূর্যোগ এর কারণে এবছর প্রদীপ তৈরির মাটিও ঠিক মত পাওয়া যায়নাই,জার কারণে মাটির প্রদীপ তৈরির কাজ ঠিক মত করতে পারিনাই। যদিও এখনো আগামী দিনে মাটির প্রদীপের চাহিদা ক্রমশ বাড়বে বলে আশাবাদী দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার ডায়মন্ড হারবার বাসুল ডাঙ্গা এলাকার মৃৎশিল্পীরা।