এবং নন্দিনী
সঙ্গীতা কর (কলকাতা)

আকাশ একদিন এক গুচ্ছ ফুল মাথায় গুঁজে দিয়ে বলেছিলো
তুমি আমার নন্দিনী বুঝলে নন্দিনী আমার তুমি
এই যে রক্তকরবী দিলাম তোমাকে এবার থেকে আমি তোমার বিশু পাগলা,
অবাক বিস্ময়ে বললাম না না আমি নন্দিনী নই
অতো সাহস নেই আমার
অন্ধকারে ভীষণ, ভীষণ ভয় করে
পৃথিবীতে অন্ধকার নামলেই হিংস্র পশু নখ দাঁত বের করে ঘুরে বেড়ায়!
আমি পারবো না আকাশ, আমি পারবো না নন্দিনী হতে
আকাশ গাল ফুলিয়ে বললো যাও কথাই বলবো না আর
তুমি শুধু আমার সৌন্দর্য উপভোগ করো
আমাকে দাও না তো কিছু,
অথচ চাইলেই দুহাত ভরে দিতে পারো স্বাধীনতা
আমার বিশুদ্ধতায় বহু আগল খুলে যেতে পারে,
শুধু চাই তোমার নন্দিনী হয়ে ওঠা
দেখো একবার অন্ধকারে এসো, এসে সাহস মাখো গায়ে
চিৎকার করে বলো ‘আমি নন্দিনী, আমি ভয় পাই না কোনো হিংস্র পশুর,’
দেখো চারিদিকে ফুটে উঠবে অজস্র রক্তকরবী!
তখন সন্ধ্যা মালতির গন্ধ ম্লান হয়ে এসেছে প্রায়
আকাশের বুক চিরে নেমে এসেছে নিকষ কালো অন্ধকার
চারিদিকে অস্পষ্ট ফিসফিস
বাতাসের সাথে দুলছে তাদের চাহিদা
কেউ ছুঁয়ে দিতে চাইছে ঠোঁট
কেউ বা স্বাদ নিতে চাইছে পরিণত মাংসপিন্ডের
হৃদয় বলছে বাঁচতে হবে আমায় বাঁচতেই হবে…..
সহসা দ্বিধা সংকোচ দূর করে ছুঁড়ে দিলাম একদলা সাহস
বিজয়িনীর হাসিতে ছেয়ে গেল দিগ্বিদিক
আকাশের বুক থেকে সরে গেল সব অন্ধকার,
আলোয় প্রস্ফূটিত হলো ক্ষতবিক্ষত দুর্বৃত্তদের দেহের রক্তে ফুটে উঠেছে কাঙ্ক্ষিত রক্তকরবী,
স্মিত হাসিতে ঝলমল করে সে যেন বললো
নারী তুমি সাহস রাখো শুধু বুকে
তাহলে দিনের আলো রাতের অন্ধকার পুরোটাই হবে তোমার
পারবে তুমি পারতেই হবে তোমায় তুমিই যে নন্দিনী।