বিশ্বাস
চায়না মন্ডল (কলকাতা)

যৌবনের প্রথম ফাল্গুনে
আমি তোমাকে ভালোবেসে ছিলাম,
তুমিও আমাকে বলেছিলে
তুমি আমাকে ভালবাসো।
তারপরে আমরা দুজনে একটু একটু করে
বাইরে ঘুরতে গেলাম,
মেলায় ঘুরলাম
নাগরদোলায় চড়লাম
তোমার হাতে হাত রেখে
নাগর দোলায় দোল খেলাম,
আমি সেদিন খুব ভয় পেয়েছিলাম
নাগর দোলায় তুমি আমাকে
জড়িয়ে ধরে বললে
কোন ভয় নেই আমিতো আছি,
তারপর আমরা ভালো ভালো খাবার খেলাম।
তখন ফোনের কোন ব্যবস্থা ছিল না
তাই তোমাকে চিঠি লিখতাম
তুমিও আমাকে চিঠি লিখতে,
তুমি বড়ই খুশি হতে
তোমার চোখে মুখে খুশির জোয়ার দেখতাম
আমিও খুব খুশি হতাম।
তারপর কয়েকটা বছর যেতে না যেতেই
তুমি আমাকে বিয়ে করলে
বিয়ে করে আমাকে বললে
আমাদের ভালোবাসা চিরকাল নতুন হয়ে থাকবে।
দুজন দুজনকে ভালোবেসে সংসার করলাম
কিন্তু আজ আমি বুঝতে পারলাম আমার ভালোবাসা আর তোমার ভালবাসা এক নয়।
সত্যি কি তুমি আমাকে ভালবেসে ছিলে
ভালোই যদি বাসলে
তবে বিশ্বাস কেন ভাঙ্গলে?
কেন কথা দিয়েছিলে
আমি শুধু তোমার তোমারই থাকবো।
কেন বলেছিলে আমাদের ভালোবাসা
চিরদিন উজ্জ্বল হয়ে থাকবে
সব সময় নতুন হয়ে থাকবে।
ভালোই যদি বাসলে
তবে বিশ্বাস কেন ভাঙলে?
কেন কথা দিয়ে কথা রাখতে পারলে না
কথাই যদি না রাখতে পারবে
তবে বিয়ে করেছিলে কেন?
আমি তো তোমার
টাকা-পয়সা,গয়না-গাটি,বাড়ি-গাড়ি কিছুই চাইনি,
চেয়েছিলাম একটু বিশ্বাস,ভালোবাসা।
ভালো যদি বাসতে হয়
বিশ্বাসকে টিকিয়ে রাখতে হয়
বিশ্বাস ভেঙ্গে গেলে
ভালোবাসা ভেঙে যায়,
যেমন আয়না ভেঙে গেলে
জোড়া লাগা যায় না
তেমনি বিশ্বাস ভেঙ্গে গেলে
আর ভালোবাসা হয় না।
আর আমি তোমাকে কোনদিনও
বিশ্বাস করতে পারবোনা,
তাই বলে তোমার আমি ক্ষতি চাইবোনা
সব সময় আমি তোমার ভালোই চাইবো।
তুমি আমাকে ঘৃণা কর
তাইতো তুমি আমাকে চোখের জল দিলে
আমি চেষ্টা করছি যাতে চোখ থেকে জল বের না হয়
কিন্তু চেষ্টা করলেও
আমি চোখের জল ধরে রাখতে পারছি না
বালিশ ভিজে যাচ্ছে।
আমি কাঁদতে চাইনা
তবুও আমি কান্না থামাতে পারছিনা।
আমি দেখতে পাচ্ছি
তোমার আর তার চোখে আনন্দের ফোয়ারা উড়ছে,
তুমি তাকে নিয়ে সংসার করো
আমি খুব খুব খুশি হব।
আমার চোখের জল
তোমাদের উপর সুখ-শান্তির জল হয়ে ঝরে পড়ুক।
বিশ্বাস ভাঙলে যে কষ্ট
সেই কষ্ট তুমি বুঝবেনা,
তুমি এখন আনন্দের জোয়ারে ভাসছো
সেই কষ্ট আর তাকে দিওনা
হয়তোবা সে সহ্য করতে পারবে না,
তোমরা সুখে থেকো
শান্তিতে থেকো ।