সেদিন

নার্গিস পারভীন (বাজেপ্রতাপপুর, পূর্ব বর্ধমান)

অনিমেষ সেদিন বলেছিল–
মেঘ সরে রোদ উঠলে ফিরে আসবো।
বকুল মালার গন্ধটা
কিছুতেই ভুলতে পারবো না।
অথচ নিম্নচাপে আকাশটাই মেঘে ঢাকা!
বিন্দু বিন্দু রোদের ঘাম শুষে নিল তার হতাশা।

আর একদিন বলেছিল–
নদীর তির তিরে স্রোতে চোখ রেখো,
নদীর খরস্রোতা হলে তবেই না মোহনা পাবো;
কিন্তু নদী কেন যেন নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে,
আমার বুকের মাঝে
শুকিয়ে যাচ্ছে স্রোত–
নিস্তরঙ্গ ফাটলের বহতা বেদনায়!

আরো একদিন বলেছিল–
তুমি মেঘ হলে আমি বৃষ্টি ছোঁবো
বৃষ্টি ছুঁয়ে একটা বেলি ফুল তোমার পায়ে রাখবো।
অথচ আমি মেঘ হতে পারিনি।
অনিমেষের শরীর বেয়ে ঝরে পড়া
বিন্দু বিন্দু ঘামে
আমি চঞ্চলা গোমতী!

তারপরে একদিন বলেছিল–
তোমার ভালোবাসার স্পর্শ যেদিন
জুঁই হয়ে ফুটবে
সেদিন গোলাপ হয়ে ফুটবে তার হৃদয়ের পাপড়ি,
অথচ আজও জুঁই হয়ে ফোটেনি কোন ফুল!
লজ্জাবতীর মত কুঁকড়ে যাওয়া ছাড়া
অন্য কোন উপায় ছিল আমার?

সবশেষে বলেছিল–
ভালবাসতে গেলে তো
কিছু অর্পণ করতে হয়।
অর্পণ করতে ঘাস হতে হয়।
রঙচটা ঘাসের গুল্ম থাকে কিন্তু প্রাণ থাকে না।
তাই একমুঠো মাটি এনে রেখো এ হৃদয়ে,
আমি আদ্যোপান্ত ঘাস হবো।

অথচ…….
সে একটা পাহাড় হলো,
গুল্মলতায় ভরালো তার বুক,
বুকের মাঝখানের বহতা উর্বশী নদীও
মেঘ হয়ে বৃষ্টি ঝরালো,
নাম না জানা কতো ফুলের সাথে বেসাতি তার
আর আমি– এখনো
কেবলই কুঁকড়ে যাওয়া একটা লজ্জাবতী গাছ!!

CATEGORIES

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus (0 )