খুব ঘুমাতে ইচ্ছে করে
মধুমিতা হালদার (মধ্যমগ্রাম, উত্তর চব্বিশ পরগণা)

একটা সময় মা বলতো ওরে ভোর বেলায় ওঠ দেখবি যা পড়বি সব মনে থাকবে।
ভাবলাম ঠিক আছে যদি একটু ভোরে উঠে পড়ি তাহলে সারাদিন টই টই করে পাড়া টোলাতে পারবো। ভোরের ঘুমটা আর হোলো না।
পড়াশুনা শেষ করেই বিয়ের তোড়জোড় , আর সেখানে তো আরো বিপত্তি গো। শাশুড়ী মায়ের আবদার সকাল সকাল উঠে কাজ কর্ম করতে হবে।বাবা মা জ্ঞান দিতো ওরে মা রে শাশুড়ীর মন জয় করতে হলে সকাল সকাল শাশুড়ীকে বেড টি দিবি দেখবি কত ভালো বউ হবি। ব্যস সেই মতো ভোরে উঠে ভালো বউ হবার নেশা জাগলো।ভালো বউ হলাম কিনা ঈশ্বর জানে তবে ভোরের ঘুমটা গেলো। মেনে নিলাম বিসর্জন দিলাম।
তারপর বাচ্চা হবার পর তো কারোর মন আর জয় করার প্রয়োজন পড়লো না। ঘুমের ঘরে আগুন লেগে বসে থাকলো। সুখের ঘুম গেল। বাচ্চা কখন খাবে কখন ঘুমাবে সেই আশায় বসে থাকতে থাকতে হাই তুলতে তুলতে ভোরটা গেল ।
বাচ্চা মানুষ করতে করতে দায়িত্ব এসে পড়লো তাতে ঘুমের বারোটা এমনিই বেজে গেল। বয়স ও বাড়তে থাকলো।
এরপর এলো ভালোবাসার সুপার হিট সুগারস্টার। ডাক্তার বলে দিলো ভোরে উঠে একটু হাটাচলা করবেন। বয়েস বাড়ছে ঠিক মতো শরীরের যত্ন নিতে গিয়ে সেই ভোরের ঘুমটা গেলো।
আচ্ছা এবার বলুন একটু ঘুমোতে ইচ্ছে করলে কোথায় যাবো ?? সেই জন্ম থেকে একই রুটিন ।
সেই ঘুরে ফিরে একটাই কেস ভোরে উঠতে হবে। শীতের লেপ আর গরমের এসি ছেড়ে। ধুর আর ভালো লাগে না। ভোরটা কিছুতেই আর আমার হলো না। এরপর ভোরটাকে সাথে নিয়ে চলেই যাবো। আফসোসটা পরের জন্মে না হয় পুষিয়ে নেবো।
CATEGORIES জেলার আপডেট