সান্তাবুড়ো
রানু মজুমদার (ব্যাঙ্গালোর)

ছোট্ট শিশু নাম তার বিশু
থাকে স্টেশনের পিছনে এক
নোংরা অন্ধকার স্যাঁতস্যাতে বস্তিতে
মা বাবা আর গোটা ছয় ভাইবোন মিলে!!
বাবা টা একটু পাগলাটে
সারাদিন ডাস্টবিনে নোংরা ঘাটে
কে যেন বলেছিল ডাস্টবিনের নোংরায়
পরে থাকা লটারির টিকিট কুড়িয়ে পেয়ে
এক ভিখারী না কি মালামাল হয়েছিল
সেই থেকে বিশুর বাপ ভবা পাগলাটে হয়ে গেছে
সারাদিন লটারির টিকিট খুঁজে মরে !!!
দিদি দুটো কি করে কি জানে
অপুষ্টি শরীর জুড়ে তবু ও সাজগোজ করে
প্রতি রাতে কোথায় যায় কে জানে
কিন্তু রোজ সকালে থলি করে খাবার আনে !!
দাদা গুলো সারাদিন তাস পেটে
লাইনের ধারে বস্তা পেতে
মালগাড়ি ভেঙে জিনিস চুরি করে
পুলিশের তাড়া খেয়ে কোথায় লুকিয়ে পরে
দিন কয়েক খোঁজ থাকে না তাদের!!
আর মা টা বাবু বাড়ি তে কাজ করে
চার পাঁচ খানা ঘরে
বাসন মাজে কাপড় কাচে ঘরদোর গুছিয়ে রাখে
সকাল থেকে সন্ধ্যে বিশু ঘোরে মায়ের পিছে পিছে
সেন বাবুর নাতি রাজা বিশুর বয়সী
বিশু খেলে তার সাথে কত হরেক খেলনা
রাজা বই পড়ে গল্প শোনায়
টিভিতে কার্টুন দেখতে দেয়
সেই ই শুনিয়ে ছিল বিশু কে
সান্তা বুড়োর গল্প…!!
সান্তা না কি লাল পোষাক পরে
মাথায় লাল টুপি পায়ে সাদা মোজা
কাঁধে থাকে বিরাট বড় ঝোলা তাতে না কি থাকে
ইচ্ছে পূরনের হরেক রকম উপহার
২৫ শে ডিসেম্বর রাতে আসে সবার মনোস্কামনা পূরন করতে সকলের বাড়ি !!
বিশু শোনে অবাক হয়ে
ভাবে কই সান্তা বুড়ো কখনো তো দেখেনি সে
আসে না কখনো তার বাড়ি তার বস্তিতে
তাদের কষ্ট তাদের ভালো থাকার ইচ্ছে
কখনো পূরন করে নি তো ঐ সান্তা বুড়ো..
মা বাবা দিদি দাদা সবাই কে কেন করতে হয় এত কষ্ট?? জবাব দিতে আসে না তো সান্তাবুড়ো
প্রতি বছর অপেক্ষা করে বিশু
কবে আসবে সান্তাবুড়ো ???
বিশুর অপেক্ষায় সার …বিশু ছোট নেই তো আর
এখন বিশু লোহা পেটে লোহার কারখানায়
বুঝে গেছে সে গরীবের জীবনে সান্তা নামক
নেই কেউ…সান্তা ক্লজ শুধু বড়লোকের
গরীবের কাছে সে এক কল্পনা
শোনা গল্প ছাড়া আর কিছু নয়..।।