একটা বিন্দু
চিত্রা কুণ্ডু বারিক (গড়িয়া, কলকাতা)

বাবা খুব ছোটবেলায় বলতেন আমাদের ভালোভাবে বাঁচতে হলে অনেক চিন্তা ভাবনা করে সাবধানে পা ফেলে এগিয়ে যেতে হবে। কখনো লাইন ক্রশ করোনা, তাহলে বেসামাল হয়ে মুখ থুবড়ে পড়বে। জীবনটা সকলের ঠিক হাতের মুঠোয়, আমরা সবাই একটা বিন্দুর ওপর দাঁড়িয়ে আছি।
তখন ছোটো ছিলাম তাই কিছু কথা মনে রাখতাম কিছু কথা পছন্দ না হলে উড়িয়ে দিতাম। এক একসময় বাবা মায়ের শাসন বিরক্তিকর লাগতো।
বড় হবার পরও কথাগুলো মনে হয়নি সেই বিন্দুর কথা। যার ফলে একটু একটু করে হোঁচট খেতে শিখলাম পদে পদে। তাও বাবার কথা মনে হয় নি। কারণ তখন শরীরের রক্ত গরম , নিজে স্বাধীন। মাঝে মাঝে কাঁদতাম মনে মনে বলতাম কেন এমন হলো। আমি কি ভুল করলাম।
বয়স বাড়ছে ভুলের পর ভুলগুলো যেন কাছে এসে জড়িয়ে ধরে। বিন্দু অনেকটাই অতিক্রম করে গেছে। বুঝতেই পারিনি কতদূর এগিয়েছে।
হঠাৎ একদিন মুখ থুবড়ে পড়লাম যেখান থেকে বেরিয়ে আসার পথ নেই। সেদিন মনে পড়ছে কেন বাবা বোঝাতেন দেখ আমি যতদিন আছি তোর পথ আগলে রাখবো কিন্তু যেদিন থাকবোনা নিজেকে সামলে রাখিস।
আজ ভীষণ ভাবে সেই বিন্দুর কথা মনে পড়ে। প্রতিটি মানুষের ক্ষেত্রে এটা মনে রাখা প্রয়োজন। কখন যে কিভাবে বিন্দু থেকে পা সরে যেতে পারে আর সাথে সাথেই মুখ থুবড়ে পড়ে যাওয়া। বিন্দু কাকে বলে এটা এখন বুঝি।