নিহত এরশাদ আলমের পরিবারের পাশে মানবতা

নিহত এরশাদ আলমের পরিবারের পাশে মানবতা

বাইজিদ মন্ডল: ডায়মন্ড হারবার:– দারুন অর্থনৈতিক সংকটে দিন কাটাচ্ছে গত জুন মাসে ২৯ শে কোলকাতার বৌবাজারের নির্মলচন্দ্র স্ট্রীটে উদয়ন হোস্টেল ছাত্রদের দ্বারা গণপ্রহারে নিহত টিভি মিস্ত্রি এরশাদ আলমের পরিবার (স্ত্রী ও দুই সন্তান)। এই দুর্ঘটনার পর পরই ৮ ইং জুলাই অসহায় এই পরিবারে সাথে মানবতা’র পক্ষ থেকে দেখা করা হয় এবং সন্তান দুটির শিক্ষার পূর্ণ দ্বায়িত্ব গ্রহন করা হয়। কথামতো এ পর্যন্ত টিউশন ফিজ,শিক্ষা সংক্রান্ত অন্যন্য বিষয় নজর রাখছেন বলে জানান তারা। মানবতার পক্ষ থেকে জুলফিকার আলী পিয়াদা তিনি জানান দুমাস আগে মানবতা’র প্রতিনিধিও পাঠানো হয়েছিলো এই পরিবারের কাছে। গত কয়েক দিন আগে পৌঁছেছিলাম এই পরিবারের সাথে,বিশেষ করে বাচ্চা দুটির সাথে দেখা করার জন্য। পৌঁছে গিয়েছিলাম মানবতা’র সদস্য আর জি কর মেডিকেল কলেজের এম বি বি এস পড়ুয়া সেখ আসিফ কে সাথে নিয়ে। দুজনের শিতের পোষাক  ও পড়ার খরচ দেওয়ার পর পরই নিহত এরশাদ আলম এর বিধবা পত্নীর কাছে জানতে পারলাম সংসারে আরও একটা বিপদ ঘটে গেছে মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে।জলে দুচোখ ভেজা এরশাদের স্ত্রী বললো সে খবর। এরশাদ এর এক দিদি ছিলো,যিনি সংসারে সকলের বড়। তিনি হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে ইন্তেকাল করেন। একের পর এক বিপদে পরিবারটি মানসিবাবে দুমড়ে মুচড়ে যাওয়ার উপক্রম! বলতে লাগলো অনেক দুঃখের গল্প। সবটার উপস্থিত সমাধান ছিলোনা আমাদের কাছে। কিন্ত মন দিয়ে শুনে একটু শান্তনা দিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করে গেলাম। মানুষটির আক্ষেপ “অনেক মানুষ, সংস্থা এসেছিলেন অনেক কথা দিয়েছিলেন,কিন্ত দ্বিতীয়বার আর কেউ আসেন নি, সাহায্যতো দুরের কথা খোঁজ খবরও নেননি কেউ আপনারা ছাড়া। প্রায় ছয় মাস কেটে গেলেও কোনও অজানা কারনে সরকারের কথা দেওয়া সাহায্যের অর্থ আজও পায়নি পরিবারটি। দারুন আর্থিক সংকটে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছে পরিবারটি।আয় বলতে দুটি বাড়িতে পরিচারিকা হিসেবে কাজ করে মাসে মোট আয় ৫০০+১০০০ মোট ১৫০০/- টাকা। ফলে খাদ্য সংকটের সম্মুখীন হওয়ায় বাচ্চাদের সময় মতো পেটভরে খেতে দিতে অপারগ হওয়ায় হতভাগী মা তাদের নানার বাড়ী বজবজ এ রেখে আসতে বাধ্য হয়েছে,এতটাই সমস্যাজর্জরিত করুণ অবস্থায় দিন কাটছে এই পরিবারটির। ইনসাফ চাওয়া নিহতের স্ত্রীর কষ্ট আর্থিক সমস্যার কারনে কোর্টে দোয়ারে হয়তো পৌঁছাতে অপারগ হওয়ায় দোষীরা ছাড়া পেয়ে যাচ্ছে ! বিচার ব্যাহত হচ্ছে ! এমতাবস্থায় রাজ্য সরকার যদি নিহতের স্ত্রীকে একটা ছোটখাটো কাজ দিয়ে পাশে দাঁড়ায়,পরিবারটির করুণ দশা থেকে মুক্তি পায়।বাচ্চা দুটির মধ্যে মেয়েটা বড়, সে পঞ্চম থেকে ষষ্ঠ শ্রেণীতে উঠলো,এবং পুত্রটি প্রথম থেকে দ্বিতীয় শ্রেণীতে। বাচ্চা মেয়েটির সাথে কথা বলার সময় বড় হয়ে কি হতে চায় জিজ্ঞেস করায়,উত্তর সে ডাক্তার হতে চায় সে। এটা শুনে এতো করুণ কাহিনি শুনে যে আমি মানুষটি ঠিক ছিলাম সেই আমার নিজের আজান্তেই চোখ পানিতে ভরে গেলো। এত অভাবের পরেও এ স্বপ্ন বুকে নিয়ে এগিয়ে চলা এ মলিন মুখে যেনো হাসি ফোটে, সফলতার হাসি, বিজয়ের হাসি। মানবতার এমন উদ্যোগ কে সাধুবাদ জানান অসহায় এই পরিবার ও এলাকার সর্বসাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে।

CATEGORIES

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus (0 )