দুখপাখির রাজ‍্যে

মৌ চক্রবর্তী (আন্দুলে, হাওড়া)

দুঃখের করিডোর গুলো এক এক করে পেরিয়ে
যখন সুখের অলিন্দটায় এসে দাঁড়িয়েছি,
ঠিক তখনই
খাঁচার ভিতর থেকে সুখপাখিটা বলে উঠলো—‘কি গো, সুখ কিনবে? সুখ?’
— অবাক হয়ে প্রাগৈতিহাসিকের মতো জড়োসড়ো বৃদ্ধ সুখপাখির দিকে তাকিয়ে দেখি,
সে মিটমিটিয়ে হাসছে আর অশীতিপরের মতো ঘনঘন মাথা নাড়ছে।বাক‍্য সরলো না আমার।ভাগ‍্যের কী নিঠুর পরিহাস! এতটুকু সুখ! তাওও হাতছাড়া হয়ে যাবার ভয় দেখায় কেউ!
মাথা নত করে পায়ে পায়ে সেখান থেকে চলে এলাম সেই পিছে ফেলে যাওয়া দুখের করিডোর গুলোয়।
জীর্ণ-মরচে ধরা রেলিংগুলোতে হাত দিয়ে ছুঁয়ে দেখলাম।
না, এখানে আমাকে কেউ ভয় দেখাবার নেই,
নেই কারোর তাচ্ছিল্যের কটাক্ষ।
কেউ বলবেনা ‘দুঃখ কিনবে’?
এখানে আমি স্বাধীন ভাবে ঘুরে বেড়াতে পারব এখানে-সেখানে, এদিকে-সেদিকে।
এ শুধু আমারই একার।
ঈশ্বর বুঝি আমার নামেই এর মালিকানা লিখে দিয়েছেন স্বহস্তে।বসলাম ভাঙা অলিন্দের পাশে।জীবনের অনেক স্মৃতি ঐ জীর্ণতা সরিয়ে উঁকি দিলো।
গাইলাম গুনগুন করে এক বুড়ো কবির যৌবনে লেখা গান—
” আছে দুঃখ আছে মৃত‍্যু বিরহ দহন লাগে/তবুও শান্তি তবু আনন্দ তবু অনন্ত জাগে”।

CATEGORIES

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus ( )