এটাই কি শান্তিপূর্ণ অভিযানের নমুনা???

জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী:- ফাইনাল এক্সপোজার:- আরজি করের তরুণী চিকিৎসক পড়ুয়ার নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত অপরাধী বা অপরাধীদের কঠোর শাস্তির দাবি - 'উই ওয়াণ্ট জাস্টিস' অবশ্যই সঙ্গত ও শুরু থেকেই এই দাবি উঠেছে। একই দাবিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সহ বিভিন্ন পেশার সঙ্গে যুক্ত এবং সাধারণ মানুষ পথে নেমেছেন। সবার একটাই দাবি - অপরাধীর শাস্তি। এই পরিস্থিতিতে 'ছাত্র সমাজ' নামধারী একটি সংগঠন নবান্ন অভিযানের ডাক দেয়। আরজি কর কাণ্ডে যুক্ত অপরাধীর শাস্তির পরিবর্তে এদের দাবি মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ। অবশ্য অপরাধীদের শাস্তির দাবি তুললে এই হঠাৎ গজিয়ে ওঠা সংগঠনকে সিজিও কমপ্লেক্স অভিযান করতে হতো। কারণ আদালতের নির্দেশে তদন্ত করছে সিবিআই এবং ঘটনা পরম্পরায় এটা সবার কাছেই স্পষ্ট এই সংগঠনকে সামনে রেখে বিজেপি নবান্ন অভিযানে নেমেছে। লক্ষ্য এই রাজ্যে ঘুরপথে ক্ষমতা দখল করা। সর্বশক্তি নিয়োগ করেও পরপর দু'বার এই দলটি যেভাবে এই রাজ্যের মানুষের হাতে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে তাতে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল কার্যত এদের কাছে দুঃস্বপ্ন। মুখে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন বলা হলেও গোয়েন্দা সূত্রে পাওয়া তথ্য থেকে পুলিশ নিশ্চিত হয় নবান্ন অভিযানকে কেন্দ্র করে অশান্তি হবেই এবং সেটাই হলো। পুলিশের তৈরি করা ব্যারিকেড ভাঙচুর করা হয়। পুলিশকে লক্ষ্য ইঁট-পাথর ছোড়া হলে তারা পাল্টা জলকামান ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ব্যবহার করে। ছোড়া ইঁট-পাথরের আঘাতে একাধিক উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিক আহত হয়। কোথাও আবার পুলিশকে ঘিরে ধরে মারধর করা হয়। পুলিশের রক্তে রক্তাক্ত হয়ে ওঠে হাওড়ার রাজপথ। পুলিশের গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। যেভাবে পুলিশ আক্রান্ত হয়েছে তাতে এটা স্পষ্ট নবান্ন অভিযানকারীদের লক্ষ্যই ছিল রাজ্যে অশান্তি সৃষ্টি করা। এতে যদি দু'একটা লাশ পড়ত তাতে তাদের লাভ হতো। সেক্ষেত্রে এইরাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির দাবিটা সহজ হতো। তাতে ইন্ধন দিত 'পদ্মপাল'। প্রশ্ন হলো - লক্ষ্যই যখন অশান্তি সৃষ্টি করা তখন শান্তিপূর্ণ নবান্ন অভিযানের ঘোষণা করা কি খুবই দরকার ছিল? পেছনে থাকা দলটির অতীতের কার্যকলাপ বিশ্লেষণ করলে দ্যাখা যাবে এদের একটাই লক্ষ্য এই রাজ্যে অশান্তি সৃষ্টি করা। এইভাবে কি এরা কোনোদিন এই রাজ্যে ক্ষমতা লাভ করতে পারবে। ৩৪ বছর ধরে রাজত্বকারী গণহত্যা, গণধর্ষণের ধারক বাহক দলটি কিন্তু ধীরে ধীরে বিস্মৃতির অন্তরালে চলে যাচ্ছে। অন্য রাজ্যে বিজেপির ট্রাক রেকর্ড ভাল নয়। যারা ধর্ষণের সঙ্গে যুক্ত অপরাধীর শাস্তির দাবি করছে তারাই কিন্তু বিলকিশ বানোর ধর্ষকদের গলায় মালা পরায়!