অপেক্ষার অবসান! শিলিগুড়িতে শুরু উত্তরবঙ্গ বইমেলা

অপেক্ষার অবসান! শিলিগুড়িতে শুরু উত্তরবঙ্গ বইমেলা

নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: অপেক্ষার অবসান! ফের শিলিগুড়ি শহরে শুরু হল উত্তরবঙ্গ বইমেলা ২০২৪। ৪২ তম বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে শুক্রবার শহরে গ্রেটার শিলিগুড়ি পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের তত্ত্বাবধানে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। সেই পদযাত্রায় সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে মোট ৩০টি বিদ্যালয়ের ১ হাজার ৪০০ জন ছাত্রছাত্রী পা মেলান। তবে, আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন শনিবার শহরের কাঞ্চনজঙ্ঘা ক্রীড়াঙ্গনে হবে বলে, আয়োজক তরফে জানানো হয়।

হায়দরপাড়া বুদ্ধভারতী উচ্চ বিদ্যালয়, শিলিগুড়ি দেশবন্ধু হিন্দি হাইস্কুল, তরাই তারাপদ আদর্শ বিদ্যালয়, রবীন্দ্রনগর গার্লস, শিলিগুড়ি বিবেকানন্দ হাইস্কুল, আলোর দিশারী, নীলনলিনী বিদ্যামন্দির, জ্যোৎস্নাময়ী গার্লস হাই স্কুল, হাকিমপাড়া বালিকা বিদ্যালয়, নেতাজি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, শিলিগুড়ি হিন্দি হাই স্কুল, রাজেন্দ্র প্রসাদ গার্লস স্কুল, শ্রীগুরু বিদ্যামন্দির, ফণীভূষণ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, শিলিগুড়ি উচ্চতর বালক বিদ্যালয়, কৃষ্ণমায়া বিদ্যালয়, শক্তিগড় বিদ্যাপীঠ, শিলিগুড়ি নেতাজি হাইস্কুলের মতো সরকারি বিদ্যালয়ের পাশাপাশি শিলিগুড়ি মডেলা কেয়ারটেকার সেন্টার অ্যান্ড স্কুল, শিলিগুড়ি টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপ পাবলিক স্কুলের মতো বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যমের বিদ্যালয়ও এই পদযাত্রায় পা মেলায়। এছাড়াও শিলিগুড়ি বিবেকানন্দ টিচার্স ট্রেনিং কলেজের পড়ুয়ারাও এদিন এই শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন।

এদিন উত্তরবঙ্গ বইমেলার আহ্বায়ক মধুসূদন সেন জানান, প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও শীতের আমেজে উত্তরবঙ্গ বইমেলা শুরু হতে চলেছে। শনিবার তার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হবে। তার প্রাক্কালে শহরের বুকে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। যা শহরের মূল সড়ক; হাশমি চক হয়ে হিলকার্ট রোড ও সেবক রোড হয়ে, বিধান রোড হয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা ক্রীড়াঙ্গনে এসে সমাপণ হয়। এবারের বইমেলায় মুক্তমনা লেখকদের বিশেষ স্থান দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে যদি কোনও স্কুল বইমেলায় তাদের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে আসতে চায়, তবে বইমেলা কমিটি তাদের প্রবেশ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে করে দেবে বলেও জানিয়েছেন মধুসূদন বাবু।

শিলিগুড়ি মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘এবার উত্তরবঙ্গ বইমেলা ৪২তম বর্ষে পদার্পণ করল। ধীরে ধীরে এই আয়োজন মহীরুহে পরিণত হচ্ছে। শিশুদের বইমুখী করতে হবে। তবেই এই আয়োজন সর্বাঙ্গীনভাবে সফল হবে।’

শিলিগুড়ির এক সরকারি স্কুল তরাই তারাপদ আদর্শ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অশোক কুমার নাথ বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রীরা এদিন এই বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় পা মেলায়। ওদের উৎসাহ ছিল বেশ চোখে পড়ার মতো। অনেকেই অনেক মণীষীদের বেশে এই পদযাত্রায় যায়। তবে এই ই-বুক পিডিএফের যুগে যে বিষয়টি আমি তুলে ধরতে চাই তাহল; বইয়ের বিকল্প কিছু নেই, এবং সুদূরেও হতে পারবে না। তাই ছাত্রছাত্রীদের প্রথম পছন্দ যেন বই-ই হয়‌। শিক্ষক শিক্ষিকাদের পাশাপাশি অভিভাবকরাও যেন এই বিষয়ে নজর রাখেন।’

এছাড়াও শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি ইংরেজি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মডেলা কেয়ারটেকার সেন্টার অ্যান্ড স্কুলের প্রিন্সিপাল অভয়া বসু বলেন, ‘আমাদের শিক্ষকদের এই আধুনিক বুদ্ধিমত্তা অর্থাৎ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের যুগে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বাচ্চাদের বইমুখী করা। পিডিএফ, ই-বুক, কিন্ডেলের মতো সহজলভ্য ব্যবস্থাপনার জন্য অভিভাবকরা কোথাও বাচ্চাদেরকে ওই পথেই হাঁটতে বাধ্য করছে। আমাদের সকলের উচিত বইয়ের ব্যবহার যথেচ্ছ ভাবে বৃদ্ধি করা। তা স্কুলেই হোক, কিংবা বাড়িতে। পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি, বিভিন্ন টপিকের বই যেন সঙ্গী হতে পারে আমাদের এবং সেই সঙ্গে আমাদের বাচ্চাদের। তবেই হয়তো আমরা সঠিকভাবে সুশিক্ষিত হতে পারব।’

CATEGORIES

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus (0 )