বুঝলে সওদাগর
সোমা নায়ক (যাদবপুর, কলকাতা)

আজকাল দিনের দৈর্ঘ্য বড্ড ছোট। বেলা পড়তে পড়তে হঠাৎ করেই যেন ঝুপ করে কোথায় হারিয়ে যায়। অথচ এই তো কদিন আগে- তুমি, আমি আর আস্ত একটা বিকেলে, প্রহর শেষের আলো।
তুমি আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বলেছিলে, তোর চোখের ঝিলে ডুব দিয়েছি মন। কখনো আমার গাল ছুঁয়ে বলেছিলে, এই পেলবতায় মাখামাখি হয়ে থাকব আজীবন। সময় গড়িয়ে গেল, বেলা ফুরিয়ে গেল, অথচ স্মৃতি! কই ফিকে হলো না তো।
সওদাগর, তোমার জন্য আমার কোনো অভিযোগ তোলা নেই। অবশ্য কোন অনুযোগও নেই তেমন। অথচ এই তো কদিন আগে, তোমার থেকেই জেদ করে কেড়ে নিয়েছি আস্ত একটা দিন, হাত ধরে হেঁটে যাওয়ার জেদে সাক্ষর নিয়েছি তোমার। চুল উড়িয়েছি, পাগলী হয়েছি, ঠোঁট ফুলিয়ে অনুযোগ করেছি কত!
কই, তখন তো একবারও মনে হয়নি, থাক। অনেক হয়েছে, আর নয়। অথচ আজ! সব যেন সেই কবেকার স্মৃতি। আচ্ছা, সত্যিই কি স্মৃতি? আজকাল বড় অদ্ভুত লাগে, জানো! মনে হয়, এসব যেন কোন জনমের কথা। সওদাগর, আমি কি জাতিস্মর?
জানো তো,
শীত নিয়ে দেখি সবার বড্ড বেশি আদিখ্যেতা। শুধুমাত্র একটা কি দুটো নাম নিয়েই সবার সে কি কাব্যি। কত মনখারাপের গল্প! অথচ দেখ, আমি যে সাবানের বুদবুদে স্বপ্ন আঁকি রোজ, কাগজের ফুলে ঘর সাজাই, হা হুতাশ না করে তুচ্ছতেও তৃপ্ত হই, ভালোবেসে আগলে রাখি, যেতে দিই দূরে, অপেক্ষা করি অনন্ত সময়, সেসব তো কারুর নজরে আসে না। এমনকি তোমারও না।
অথচ আমি, কাঙালের মতো কেবল অপেক্ষাই করি। হাপিত্যেশ আশায় থাকি- আমার ভাবনা গুলো তোমায় ছুঁয়ে যাক, অভিমানটা তোমার চোখে পড়ুক।
আচ্ছা সওদাগর, সবার সব আছে, চাইছে, পাচ্ছে, হারাচ্ছে আবার ঠিক ফিরেও পাচ্ছে।
আমি কি এমন চেয়েছি গো যার আকাঙ্ক্ষায় আমার অপেক্ষাকে এমন অন্তহীন হতে হলো।