আর্তনাদ
জয়া সান্যাল (কলকাতা)

বিভৎস স্বপ্নটা পিছনে তাড়া করে ফেরে
বালিশে মাথা দিলেই ওরা ঘিরে এসে ধরে।
আমি তো ওদের চিনতে পারি না
মুছে গেছে মনের এ্যালবাম থেকে।
মুখ গুলো কেড়ে নিয়েছে আমর রাত
আমার বালিশের আদর
সব সব কিছু
ওরা কেবলই আসে পিছু পিছু।
চল্লিশের দোড়গোড়ায় দাঁড়িয়ে আছি
ভাঙা দড়জায় নেই কোন হুড়কো
শীতল হাওয়ায় কাঁপে অবিরত।
একটা বিভৎস শৈশব
বার বার ফিরে আসে
স্নেহের পরশ লাগানো মুখটা
আবছা মনে পড়ে।
বয়স তখন ছিল আমার
বছর পাঁচেক
আঁতুড়ঘরের গন্ধ টাও তীব্র ছিল
শরীরে আর মনে।
সারাদিন হাড়ভাঙা পরিশ্রমের পর
স্নেহের মলম লাগিয়ে
কোলের কাছে নিতো টেনে
ঘুম পাড়ানি গান গাইত কানে
ভালো থাকার চেষ্টায় সে
খুঁজে নিতো জীবনের মানে।
হটাৎ সেদিন সকালে
উঠোন জুড়ে
একটা চীৎকার
বাঁচাতে দাও আমাকে
বাঁচাতে দাও আমাকে
শুধুই আমার খোকার জন্য।
সেদিন কেউ শোনেনি কথা
পৈশাচিক উল্লাসে চাপা হাসির কায়া
দাউ দাউ আগুনের
লেলিহান শিখা
ক্রমশঃ গ্রাস করলো
আমার স্নেহের আঁচল খানি
আমি তাকিয়ে থাকলাম ফ্যালফ্যাল করে
বোধ বুদ্ধি লোপ পেয়ে।
বুঝলাম না
ওরা জ্বালিয়ে দিল
আমার শৈশব
কেড়ে নিলো আমার প্রিয়
আঁচলের গন্ধ।
আজও নিশুতি রাতের অন্ধকারে
আমি শুনতে পাই
সেই বাঁচার করুণ আকুতি_ _ _
আমাকে বাঁচাতে দাও
আমাকে বাঁচাতে দাও তোমরা
শুধু আমার খোকার জন্য।