
ঝাড়খণ্ড বাংলা সীমান্তে জওয়ান খুন,গোয়েন্দা তদন্তের নেপথ্যে
কৌশিক মুখার্জী: সালানপুর:-
ঝাড়খণ্ড-পশ্চিমবঙ্গ সীমান্তের ডোমদহ উপর ডাঙ্গায় সিআইএসএফ হেড কনস্টেবল সুনীল পাসওয়ানের (৪৫) নৃশংস হত্যাকাণ্ডে তদন্তে নেমেছে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারের গোয়েন্দা বিভাগ। মাথায় গুলির চিহ্ন সহ তাঁর দেহ উদ্ধারের পর এই ঘটনা অপরাধপ্রবণ এলাকার নিরাপত্তাহীনতাকে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও আলামত সংগ্রহ করে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুটি গুলির খোল, একটি মোটরবাইক, মদের বোতল ও রক্তের দাগ উদ্ধার করেছে। এই আলামতগুলো ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। একজন সন্দেহভাজনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তাঁর বক্তব্যের ভিত্তিতে পুলিশ অপরাধীদের শনাক্তকরণের চেষ্টা করছে।ডোমদহ ও আশপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর মাধ্যমে ঘটনার সময়ে সন্দেহজনক কোনও ব্যক্তি বা যানবাহনের উপস্থিতি শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।গোয়েন্দা বিভাগ এই হত্যাকে একটি পরিকল্পিত হামলা হিসেবে বিবেচনা করছে। তদন্তের মূল দিকগুলো হলো:
জমি-সংক্রান্ত দ্বন্দ্ব,সুনীল সম্প্রতি ঘটনাস্থলের কাছে একটি জমি কিনেছিলেন। এই জমি কেনা বা নির্মাণকাজের সঙ্গে কোনও বিরোধ জড়িত কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।ডোমদহ উপর ডাঙ্গা দীর্ঘদিন ধরে দুষ্কৃতীদের আড্ডাস্থল। পুলিশ এলাকার অপরাধী গোষ্ঠী ও তাদের তৎপরতার তথ্য সংগ্রহ করছে।
গুলির খোল থেকে অস্ত্রের ধরন ও উৎস চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। এটি সীমান্তবর্তী এলাকায় অস্ত্রের অবাধ প্রবাহের তথ্য উন্মোচন করতে পারে।মিহিজাম পুলিশ ও পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে গোয়েন্দা বিভাগ। এসিপি কুলটি এসকে জাভেদ হাসান জানিয়েছেন, তদন্তে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্লু পাওয়া গেছে।অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করে এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। পুলিশের দাবি, আলামত ও সিসিটিভি ফুটেজের বিশ্লেষণের মাধ্যমে দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা সম্ভব হবে।
ডোমদহ এলাকার অপরাধপ্রবণ ইতিহাস তদন্তকে জটিল করছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশের নিয়মিত টহলের অভাবে দুষ্কৃতীরা এখানে বেপরোয়া। তবে গোয়েন্দা বিভাগের তৎপরতা এলাকায় নিরাপত্তা ফিরিয়ে আনতে এবং সুনীলের পরিবারের জন্য ন্যায় নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।
এই তদন্ত শুধু একটি হত্যার কিনারা নয়, সীমান্তবর্তী এলাকার অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ও প্রশাসনিক দুর্বলতা দূর করার একটি সুযোগ।