
চিকিৎসকের গাফিলতিতে প্রসূতি মৃত্যুর অভিযোগ, উত্তাল হাসপাতাল চত্বর
রক্তিম সিদ্ধান্ত: মুর্শিদাবাদ:-
আরজি কর হাসপাতালের পড়ুয়া চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় যখন উত্তাল সারা দেশ তখনই চিকিৎসার গাফিলতিতে রোগী মৃত্যুর ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল হাসপাতাল চত্বরে। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার সকালে মুর্শিদাবাদের কান্দি মহকুমা হাসপাতালে। মৃত মহিলার নাম আবিদা সুলতানা। বাড়ি বীরভূমের কুলদিহা গ্রামে।
মৃত মহিলার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে হঠাৎই পেটে ব্যথা ওঠে প্রসূতি আবিদা সুলতানার। বাড়ির লোকজন তাঁকে কান্দি মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে আসে চিকিৎসার জন্য। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, আবিদাকে রাত আটটার সময় হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও ডাক্তার তাঁকে দেখতে আসেন রাত ন’টার সময়। সেই সময় তাঁকে একটি ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। ইঞ্জেকশন দেওয়ার এক ঘন্টার মধ্যেই ফের পেটে ব্যথা শুরু হয় ওই প্রসূতির। তখন পরিবারের লোকজন বারবার ডাক্তার এবং নার্সদের ডাকলেও তাঁরা একবারও তাঁকে দেখতে আসেননি বলে অভিযোগ। বুধবার ভোররাতে মৃত্যু হয় ওই প্রসূতির।
এরপরই চিকিৎসার গাফিলতিতে প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন পরিবারের সদস্যরা এবং হাসপাতাল চত্বরে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। ঘটনার খবর পেয়ে কান্দি থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী হাসপাতালে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
মৃতের স্বামী আনিসুর রহমান বলেন, ‘ডাক্তারবাবু প্রথমেই দেখে বলেছিলেন, স্ত্রী’র কিছুই হয়নি। যদি কিছুই না হবে তাহলে সে কিভাবে মারা গেল? আমরা এর বিচার চাই। যে চিকিৎসকের গাফিলতিতে আমার স্ত্রী’র মৃত্যু হল তার ফাঁসির দাবি জানাচ্ছি।’ মৃতার পরিবারের এক মহিলার অভিযোগ, ‘আবিদার যখন পেটে ব্যথা হচ্ছিল তখন বারবার ডাক্তার এবং নার্সকে ডাকার পর নার্সরা এসে বলে তার কিছুই হয়নি এবং সে নাটক করছে। এমনকি আমাদের বহরমপুরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছিল।’ এই প্রসঙ্গে কান্দি মহকুমা হাসপাতালের সুপার রাজেশ সাহা ক্যামেরার সামনে কিছু না বলতে চাইলেও তিনি জানান, ‘ওই মহিলা পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। হাসপাতালে ভর্তির পরই তাকে লেবার রুমে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসার পর তিনি কিছুটা সুস্থ বোধ করেন। কিন্তু ভোরের দিকে তার মৃত্যু হয়।’ তিনি বলেন, ‘মৃত্যুর কারণ জানতে পুলিশের তরফে দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মৃতের পরিবারকে দিতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তারা রাজি হননি। দেহটি নিয়ে তারা হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেছেন। এই মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানের জন্য একটি তদন্ত কমিটি তৈরি করা হয়েছে।’