ভূত চতুর্দশী- একটি হিন্দু উৎসব

ভূত চতুর্দশী- একটি হিন্দু উৎসব

অঙ্কিতা চ্যাটার্জ্জী: ফাইনাল এক্সপোজার:-

দীপান্বিতা অমাবস্যার আগের দিন ভূত চতুর্দশী পালন করা হয়ে থাকে। ভূত চতুর্দশীকে ‘নরক চতুর্দশী’ও অনেকে আবার ভূত চতুর্দশীকে ‘বাঙালির হ্যালুইন’ বলে থাকেন। তবে প্রকৃত অর্থে এটা ঠিক হ্যালুইন নয়। এই দিনটার অন্য মাহাত্ম্য আছে।
পুরাণমতে, দানবরাজ বলি যখন স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতাল দখল করে নেন তখন সকলের বেঁচে থাকা কষ্টকর হয়ে যায়। দানবরাজের তান্ডব থেকে সকলকে বাঁচানোর জন্য দেবগুরু বৃহস্পতি ভগবান শ্রী বিষ্ণুকে উপায় বলে দেন। তাঁর উপায়ানুযায়ী তিনি বামন রূপে দানবরাজের কাছে আসেন। ভিক্ষা স্বরূপ তিন পদ সমান ভূমি চান। বলাবাহুল্য শ্ৰী বিষ্ণুকে চেনার পরও বলি না চেনার ভান করে তিন পদ সমান ভূমি দিতে রাজি হোন।
বামন রূপে ভগবান শ্রী বিষ্ণু এক পদে স্বর্গ, এক পদে মর্ত্য নেন। পরবর্তী পদ ফেলার আগেই দানবরাজকে তিনি জিজ্ঞাসা করলে দানবরাজ নিজের মাথা পেতে দেন। সেজন্য ভগবান শ্রী বিষ্ণু তার মাথায় পা দিয়ে তাকে পাতালে পাঠিয়ে দেন।
যেহেতু, দানবরাজ সবটা জেনেও শ্রী বিষ্ণুকে ভূমি দেন, সেজন্য ভগবান শ্রী বিষ্ণু দানবরাজ বলির নরকাসুর রূপের পুজোর প্রবর্তন করেন। দীপান্বিতা অমাবস্যা তথা কালীপূজার আগের দিন ভূত চতুর্দশীর তিথিতে দানবরাজ তার অনুচরদের সাথে নিয়ে মর্ত্যে আসেন। সেজন্যই ভূত চতুর্দশীকে ‘নরক চতুর্দশী’ও বলা হয়ে থাকে।

এছাড়াও শাস্ত্রমতে বলা হয় যে ভূত চতুর্দশীর দিন পূর্বপুরুষেরা নিজের নিজের বাড়িতে আসেন। সেদিন চৌদ্দ শাক খাওয়া হয় এবং সন্ধ্যেবেলা চৌদ্দটা প্রদীপ জ্বালানো হয়। বলা হয় যে, সন্ধ্যেবেলা পূর্বপুরুষেরা নিজের নিজের বাড়িতে আসেন, তাদের রাস্তা আলোকিত করার জন্য চৌদ্দ প্রদীপ জ্বালানো হয় তাদের উদ্দেশ্যে।

এছাড়াও বলা হয় যে, ভূত চতুর্দশীর তিথিতে মা কালী ‘চামুন্ডা’ রূপে তার চৌদ্দ ভূত’কে সাথে নিয়ে ভক্তদের বাড়িতে আসেন অশুভ শক্তিকে দূর করতে। সেজন্যও চৌদ্দ প্রদীপ জ্বালানো হয়ে থাকে।

CATEGORIES

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus (0 )