ইচ্ছে করে অনেক কিছু খাই

চিত্রা কুণ্ডু বারিক (চিত্তরঞ্জন, পশ্চিম বর্ধমান)

   মাঝে মাঝে ভীষণ একা লাগে। ছেলে চাকরি সুত্রে বাইরে চলে যাওয়ার পর থেকে এই একাকী মেনে নিতে পারিনা। তাই খুব কাছের এক বান্ধবী  এই সময়টাতে আমাকে খুব কাছে টেনে নিয়েছে। 

   তার ছোটো একটা দোকান নিয়ে সারাদিন ভীষণ ব্যস্ত থাকে।  রোজ ফোনে যোগাযোগ রাখে। সমস্ত দুঃখের কথা ওর কাছে বলতাম। একদিন বলল শোন তুই প্রতিদিন আমার দোকানে চলে আয়। তাহলে আমার একটু সুবিধা হয়। বাড়িতে শান্তিতে একটু খেয়ে আসতে পারবো তুই সাথ দিলে। 

    যথারীতি সঙ্গ দিতে শুরু করলাম আমি দোকানে পৌঁছোলে তবে সে খেতে যায়। আর ওইটুকু সময় বিভিন্ন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হতে বেশ ভালো লাগে। 

  কত ধরনের কাষ্টমার আসে। আবার কিছু মানুষ দেখে দাম জিজ্ঞেস করে মুখ কুঁচকে চলে যায়। আসলে দোকানটি একটি লোভনীয় খাবারের দোকান। বিশেষ করে বাচ্চাদের জন্য। 

 এক একজন বাচ্চা মায়ের কাছে বায়না করে আর মা হিড়হিড় করে টানতে টানতে বাচ্চাকে বাড়িতে নিয়ে যায়। বিশেষ করে স্কুল বাচ্চা। 

   আবার কিছু জেদী বাচ্চা থাকে মা না কিনে দিলে হাত পা ছড়িয়ে বসে কাঁদতে শুরু করে। 

  একটি বাচ্চা মেয়ের সঙ্গে এই সুত্রে সামান্য পরিচয় হয়। দুপুরে স্কুল ফেরত পাশের দোকানে বাবার সঙ্গে আসে। হয়তো বাবার কিছু বিজনেস আছে কেনাকাটা করে বাড়ি ফেরে মেয়েকে নিয়ে। সেই মুহূর্তটুকু মেয়েটি বান্ধবীর দোকানে এসে সমস্ত খাবারগুলো কাঁচের ওপর থেকে অনুভব করে। মাঝে মাঝে হাত দিয়ে তার কোন কোন খাবার পছন্দের সেগুলো বারবার হাত বোলাতে থাকে।

  পূজোর সময় একদিন তার মায়ের সঙ্গে এসে পছন্দের খাবার কেনে। 

  এখন পূজো শেষ যথারীতি আবার সেই চেয়ে থাকা। তবে এখন বাবার থেকে জেদ করে পাঁচ টাকা হাতিয়ে নেয়। এবং আমার কাছে এসে যা থাকে নিয়ে যায়। 

 খুব কষ্ট হয়, ইচ্ছে থাকলেও নিজের থেকে কিছু উপহার হিসেবে দিতে পারিনা। কারণ বাবার সম্মানে লাগতে পারে। 

  আজও মেয়েটি দোকানে আসে এবং দেখতে থাকে। হয়তো মনে মনে ভাবে বড় হলে চাকরি করে অনেক কিছু মন ভরে খাবে। 

 ইচ্ছেগুলো সবার পূর্ণ হোক সমস্ত বাচ্চা ভালো হোক সুস্থ হোক।

CATEGORIES

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus (0 )