অনন্ত প্রতিক্ষা
প্রবীর কুমার চৌধুরী (গড়িয়া, কলকাতা)

শুধু তোমারি জন্যে-
এই রক্তাক্ত পৃথিবীতে আমার বেঁচে থাকা।
প্রতিদিন বন্ধুর পথ বুকে ঠেলে ঠেলে-
আজও শপদের মালা হাতে,
ফাগুনের জ্বালা সয়ে সয়ে সহসা বসন্ত বিহারে পৌঁছে মুক্তি সূর্যের গান গাই ।
শুধু তোমারি জন্যে-
বারুদের গন্ধভরা এ পৃথিবীতে পায়ে পায়ে
প্রতিবাদের মিছিলে সামিল হই।
কপালের নোনা ঘাম ঝরে পড়ে রাজপথে,
ব্যর্থতার ছোবল প্রতিনিয়ত দংশায় পাঁজরে
তবুও শেষ আঘাত হানবই বর্বরতার বুকে।
শুধু তোমাই জন্যে-
আমার বুকে জমা ঠেলে ওঠে যত উদ্বেগ,
রাতের শ্বাপদেরা দেয় উঁকি নিশীথের দরজায়,
জান কি, মনুষ্যত্ব ঘুমিয়ে আছে টাকার বিছানায় ?
কাল বীর্যপাত করে অনন্তকাল সময়ের গর্ভে
প্রতিবাদের সন্তান ভূমিষ্ঠ হবার সুদীর্ঘ আশায়।
শুধু তোমারি জন্যে –
বসন্তের কোকিল এখনও গান গায়,
প্রেমের প্রদীপ তমাসার প্রাসাদে আলো জ্বালে ।
তবুও প্রতিদ্বন্দ্বী লোভের দম্ভ ছুটে আসে –
কেড়ে নেয় শান্তির সংসার।
দুর্ভাগ্য, বিপ্লব এখনো ঘুমিয়ে আছে অশ্লীলতার দাপটে…।
মানবতা সাড় ফিরে পেতে চায় ,
একই বৃন্তে কি কোনদিন ফুটবে না দুইফুল?
তোমার শারি-জুড়ি আমার লালন-বাউল
একই গলা, একই ভাষা, সুর, দুটি ভিন্ন প্রাণ আকূল!
খাঁচার ভিতরে অচিন দেশের পাখি –
সব ফেলে ঘরে আসে আবার একই ভাবে চলে যায় ।
দেবতার মন্দিরে তুমি শপথের ডেড়া বাঁধ ,
আমি মসজিদে গিয়ে স্বপ্নের চিরাগ জ্বালি।
মন্দির থেকে প্রেমের প্রসাদ হোক বিলি,
আজানের শব্দে পবিত্র হোক সব মন।
কবিতায় যে দীর্ঘ প্রতিক্ষা একবার ফিরে এসো –
হে অনাদি অতীত, প্রতিটি ঘরে দেখবো সুখের সংসার।