
সুরের জাদুতে শিলিগুড়ি মাতিয়ে ‘স্পেশাল ভয়েস অফ বেঙ্গল সিজন ৬’
ভাস্কর চক্রবর্তী, শিলিগুড়ি, ২ জুলাই: ওঁদের মধ্যে কেউ পূর্ণ দৃষ্টিহীন আবার কেউ সামান্য দৃষ্টি নিয়ে জীবন যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছে! বুধবার শিলিগুড়ির সমাজসেবী সংস্থা ‘উত্তরের দিশারী’ দীনবন্ধু মঞ্চে আয়োজন করেছিল এক অভিনব সঙ্গীত প্রতিযোগিতা – “স্পেশাল ভয়েস অফ বেঙ্গল সিজন ৬”। বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিল্পীদের জন্য আয়োজিত এই ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলা এবং ভারতের নানা প্রান্ত থেকে সুরের জাদুকররা হাজির হয়েছিলেন। এক সুরের মূর্ছনায় মোড়া ব্যতিক্রমী সন্ধ্যার সাক্ষী থাকল গোটা শিলিগুড়ি শহর।
প্রতিযোগিতার প্রাথমিক পর্বে ১৪০ জন প্রতিযোগী অংশ নিয়েছিলেন। তাদের মধ্য থেকে নির্বাচিত ১০ জন প্রতিযোগী গতকালের গ্র্যান্ড ফিনালেতে তাদের অনবদ্য পরিবেশনা দিয়ে দর্শক-শ্রোতাদের মুগ্ধ করে তোলেন। সুরের মূর্ছনায় ভরে ওঠে দীনবন্ধু মঞ্চের প্রতিটি কোণ।
এবারের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী শিল্পীরা হলেন হাওড়া থেকে অহনা চক্রবর্তী, দক্ষিণ দিনাজপুর থেকে অমিত কুমার দত্ত, উত্তর ২৪ পরগনা থেকে অপূর্ব সিং ও রুনু পাল, দার্জিলিং থেকে আশালতা মণ্ডল, শিখা রায়, কাকলি ভট্টাচার্য ও আইজেল তিরকে, এবং পূর্ব বর্ধমান থেকে কানাই ধীবর ও সুপ্রিয়া বিশ্বাস। এদের মধ্যে থেকে প্রথম স্থান অর্জন করেন: বর্ধমান জেলার কানাই ধীবর, দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেন: দার্জিলিং জেলার কাকলি ভট্টাচার্য এবং তৃতীয় স্থান অর্জন করেন: উত্তর ২৪ পরগনার অপূর্ব সিং। প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে স্মারক, শংসাপত্র ও আর্থিক পুরস্কার দিয়ে সংবর্ধনা জানানো হয়। এছাড়াও এদিন উত্তরের দিশারী এক্সেলেন্স অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয় সমাজসেবক ডঃ পার্থ সাহা ও সমীর দে-কে।
এদিনের অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিলিগুড়ি শহরের ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকার, জলপাইগুড়ি গভর্নমেন্ট মেডিকেল কলেজের মেডিক্যাল সুপারিনটেন্ডেন্ট ও ভাইস প্রিন্সিপাল ডাঃ কল্যাণ খান, উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ডাঃ সন্দীপ সেনগুপ্ত, নর্থবেঙ্গল হ্যান্ডিক্যাপড্ রিহ্যাবিলিটেশন সোসাইটির সভাপতি শ্যামল দাস এবং নর্থবেঙ্গল হ্যান্ডিক্যাপড্ রিহ্যাবিলিটেশন সোসাইটির সম্পাদক চন্দন ঘোষ। তাঁদের উপস্থিতি এই মহতী উদ্যোগকে আরও মহিমান্বিত করেছে।
বিচারকের আসনে ছিলেন প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ সত্যজিৎ মুখোপাধ্যায়, গৌরী মিত্র এবং অদিতি চক্রবর্তী। তাঁদের বিচক্ষণ রায় প্রতিযোগিতার মানকে আরও উন্নত করেছে। ‘উত্তরের দিশারী’-র এই আয়োজন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিল্পীদের প্রতিভা বিকাশে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে এবং সমাজের মূল স্রোতে তাদের অন্তর্ভুক্তির বার্তা দিয়েছে।