‘বর্ণময় ৫০’-এর মাধ্যমে দূরদর্শন কলকাতার ৫০ বছরের যাত্রার উদযাপন

‘বর্ণময় ৫০’-এর মাধ্যমে দূরদর্শন কলকাতার ৫০ বছরের যাত্রার উদযাপন

প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো
ভারত সরকার


কলকাতা, ১ আগস্ট, ২০২৫

১৯৭৫ সালে যখন দূরদর্শন কলকাতা প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন এটি পূর্ব ভারতের জন্য এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছিল। প্রথম সম্প্রচার সম্ভব হয়েছিল প্রযুক্তিবিদ, শিল্পী, ইঞ্জিনিয়ার এবং সরকারি কর্মীদের কঠোর পরিশ্রমে। আজ সায়েন্স সিটি অডিটোরিয়ামে এই ৫০ বছরের যাত্রা উদযাপন করতে তাঁদের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে তাঁদের সম্মান জানানো হয়। প্রধান অতিথি ছিলেন দূরদর্শনের মহাপরিচালক শ্রী কে সতীশ নাম্বুদিরিপাদ। তাঁর সঙ্গে ছিলেন শ্রী রাজীব কুমার ভট্টাচার্য (অতিরিক্ত মহানির্দেশক, পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব ভারত) এবং শ্রী গোপাল কুমার (উপ-মহানির্দেশক, প্রকৌশল, দূরদর্শন কলকাতা)।

অনুষ্ঠান শুরু হয় ডিজিটাল প্রদীপ প্রজ্বলনের মাধ্যমে। এরপর অতিথিদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। শ্রী ভট্টাচার্য স্বাগত ভাষণে বলেন, দূরদর্শন শুরু থেকেই সকল শ্রেণীর মানুষের জন্য অনুষ্ঠান তৈরি করত—শিশু, পড়ুয়া, কৃষক, শ্রমিক ও চাকরিজীবী—সবার কথা ভেবেই অনুষ্ঠান হতো।

তিনি বলেন, দূরদর্শনের লক্ষ্য ছিল সব মানুষকে সঙ্গে নিয়ে চলা। আজও সেই চেতনাই কাজ করে। তিনি জানান, এখনো বহু মানুষ দূরদর্শনের সরল আর মানসম্পন্ন অনুষ্ঠানের টানেই এই চ্যানেল দেখেন।

দূরদর্শনের মহানির্দেশক শ্রী নাম্বুদিরিপাদ বলেন, দূরদর্শনের সবচেয়ে বড় শক্তি তার ইতিহাস। আবার এটাই তার সবচেয়ে বড় সমস্যা। তিনি বলেন, ১৯৮২ সালে দূরদর্শন রঙিন সম্প্রচার শুরু করে। এরপর ১৯৮০-এর দশক থেকে ১৯৯০-এর দশকের শেষ পর্যন্ত ছিল এর সোনালি সময়। সেই সময় রামায়ণ, মহাভারত, মালগুড়ি ডেজ-এর মতো বহু জনপ্রিয় ধারাবাহিক সম্প্রচারিত হয়। কিন্তু ১৯৯৭ সালের পর পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। তখন নতুন নতুন চ্যানেল আসতে শুরু করে। এখন আমরা ডিজিটালের যুগে আছি, যেখানে দর্শক যখন খুশি তখন অনুষ্ঠান দেখতে পারেন। কিন্তু দূরদর্শনের প্রচার এখনও সময় অনুযায়ী চলে।

এই অবস্থায় টিকে থাকতে হলে দূরদর্শনকে আরও আধুনিক হতে হবে। দ্রুত পরিবর্তন আনতে হবে। তিনি জানান, ‘ওয়েভস’ নামে একটি নতুন ওটিটি প্ল্যাটফর্ম আসছে, যেখানে দূরদর্শনের বাছাই করা অনুষ্ঠান থাকবে। তিনি আর-ও বলেন, এখন দূরদর্শনের ইনস্টাগ্রামে ১০ লক্ষের বেশি ফলোয়ার রয়েছে এবং ইউটিউবে ৬০ লক্ষেরও বেশি সাবস্ক্রাইবার। তিনি জানান, ইউটিউব এখন একটি বড় মাধ্যম হয়ে উঠেছে, যেখানে কনটেন্ট নির্মাতারা ভালো রোজগার করছেন। দূরদর্শনকেও এই নতুন মাধ্যম ব্যবহার করে এগিয়ে যেতে হবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

অনুষ্ঠানে একটি মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক পরিবেশনা হয়। শিল্পীরা ছিলেন শ্রীমতী ঊষা উত্থুপ, শ্রীমতী চৈতী ঘোষাল, শ্রী দেবেশ রায়চৌধুরী, শ্রী জগন্নাথ বসু এবং শ্রীমতী ঊর্মিমালা বসু। তাঁদের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠানটি আরও মনোরম হয়ে ওঠে।

দূরদর্শনের শুরু হয় ১৯৫৯ সালে। ১৯৯৭ সালে এটি প্রসার ভারতীর অধীনে স্বাধীনভাবে কাজ শুরু করে। ১৯৭৫ সাল থেকে দূরদর্শন কলকাতা বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি এবং প্রতিভাকে তুলে ধরতে বড় ভূমিকা রেখেছে। ‘বর্ণময় ৫০’ এই দীর্ঘ যাত্রার গর্বিত উদযাপন।


SSS/RS/01.08.25….

CATEGORIES

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus ( )