
অনুদান ও সামাজিক দায়িত্ববোধ
রিমা ঘোষ: ফাইনাল এক্সপোজার:-
আর মাত্র কয়েকটি দিন বাকি। তারপরই বাংলার 'দুয়ারে হাজির' হতে চলেছে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গোৎসব। ইতিমধ্যে কাউণ্ট ডাউন শুরু হয়ে গেছে। মৃৎশিল্পী থেকে শুরু করে সর্বস্তরে চরম ব্যস্ততা চোখে পড়ছে। এবারও হয়তো চমকপ্রদ কোনো থিম নিয়ে হাজির হবে কোনো পুজো কমিটি। যদিও মুখ্যমন্ত্রী সতর্ক করে দিয়েছেন। তার আশঙ্কা এই থিমের টানে হয়তো কোনো বিপর্যয় ঘটতে পারে। মুহূর্তের মধ্যে আনন্দ বিষাদে পরিণত হবে। সন্তান হারা মায়ের বুকফাটা আর্তনাদ পুজোর আনন্দ নষ্ট করে দিতে পারে। ক্ষমতা লাভের পর তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত সরকারের পক্ষ থেকে রাজ্যের পুজো কমিটির জন্য অনুদানের ব্যবস্থা করা হয়। শুরুটা হয়েছিল ২৫ হাজার টাকা দিয়ে। এবার সেটা ৮৫ হাজার হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী পরের বছর এটা এক লক্ষ টাকা হবে। এছাড়াও বিদ্যুৎ ও দমকলের অনুমতির ক্ষেত্রে ছাড় আছে। এককথায় বলা যেতে পারে দুর্গাপুজোর ব্যাপারে পুজো কমিটিগুলোর প্রতি মুখ্যমন্ত্রী যথেষ্ট উদার। বিনিময়ে সমাজের প্রতি পুজো কমিটিগুলোর একটা দায়বদ্ধতা থেকে যায়। যেভাবে হুমকি দিয়ে চাঁদা আদায় করা হয় সেটা কখনোই শোভনীয় নয়। পাড়ায় থাকতে গেলে চাঁদা দিতেই হবে - যার প্রতি এই হুমকি বাক্য ছুঁড়ে দেওয়া হচ্ছে দাবি মত তার চাঁদা দেওয়ার সামর্থ্য নাই থাকতে পারে। তাকেও ছেলেমেয়েদের নতুন জামা কাপড় কিনে দিতে হয়। চাঁদার জন্য অযথা চাপ সৃষ্টি না করে সবাইকে আনন্দ উপভোগ করার সুযোগ করে দেওয়া হোক। সেক্ষেত্রে পুজো কমিটিগুলোকে খরচের রাশ টানতেই হবে। সর্বদা বিগ বাজেটের পুজো আকর্ষণীয় হবে তার নিশ্চয়তা কোথায়? অনেক সময় স্বল্প বাজেটের পুজো মানুষের মনে যথেষ্ট আনন্দের সৃষ্টি করে। গ্রাম বাংলায় তার পরিচয় পাওয়া যায়। ঠাকুর দেখতে আসা জনগণকে পুজো কমিটিগুলো বৃক্ষরোপণে উৎসাহিত করতে পারে। একইসঙ্গে বাল্যবিবাহ রোধ, ডেঙ্গু সম্পর্কে সচেতন করা, প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য সাপ সহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী রক্ষা করার জন্য মানুষকে সচেতন করা সহ বিভিন্ন কুসংস্কার থেকে মানুষকে দূরে থাকার জন্য পরামর্শ দেওয়া যেতেই পারে। বহু মানুষ কিন্তু পুজো মণ্ডপে ভিড় করে। সেক্ষেত্রে এই ধরনের সচেতনতামূলক প্রচার মানুষের মনে যথেষ্ট প্রভাব ফেলবেই। পুজো মণ্ডপে লক্ষ লক্ষ মানুষের উপস্থিতিতে নতুন সমাজ গড়ার শপথ নেওয়া যেতেই পারে। সেক্ষেত্রে পুজো কিন্তু প্রকৃত অর্থে সাফল্য লাভ করবে।