আল্লাডি মোড়ে গোডাউনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য নিয়ে উঠছে প্রশ্ন

আল্লাডি মোড়ে গোডাউনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য নিয়ে উঠছে প্রশ্ন

কৌশিক মুখার্জী: সালানপুর:-

সাতসকালে আসানসোলের সালানপুর থানার অন্তর্গত চিত্তরঞ্জন রোডের পাশে আল্লাডি মোড়ে একটি বহুজাতিক সংস্থার রায় ট্রেডার্সের গোডাউনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কাকভোরে লাগা এই আগুনের খবরে এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা দ্রুত পুলিশ ও দমকল বিভাগে খবর দেন। আসানসোল ও চিত্তরঞ্জন থেকে দমকলের দুটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এই ঘটনা এলাকায় দমকলের স্থায়ী ব্যবস্থার অভাব এবং গোডাউনে মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যের উপস্থিতি নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।ঘটনাস্থলে উপস্থিত সালানপুর ব্লকের জয়েন্ট বিডিও রবি সৌরভ গোডাউন থেকে লসি, শ্যাম্পু, সাবান, আমুল কুলের মতো বিভিন্ন পণ্য বাজেয়াপ্ত করেন। তদন্তে জানা যায়, গোডাউনে থাকা বহু পণ্যের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে গেছে। কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে ম্যানুফ্যাকচারিং বা মেয়াদোত্তীর্ণ তারিখের কোনো চিহ্নই পাওয়া যায়নি। এই ঘটনা এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, এই ধরনের গোডাউনে নিয়মিত তদারকির অভাব কেন? এই পণ্যগুলো বাজারে সরবরাহ হলে জনস্বাস্থ্যের উপর এর প্রভাব কী হতে পারে, তা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে।দমকল বিভাগের আধিকারিক তাপস ঘোষ জানিয়েছেন, আগুন লাগার সঠিক কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে তিনি উল্লেখ করেন, গোডাউনে কোনো ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। এই ঘটনা এলাকায় দমকলের স্থায়ী কেন্দ্রের অভাবের সমস্যাকে সামনে এনেছে। রূপনারায়ণপুর, যেখানে জনবসতি ও দোকানপাটের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাকে যখন-তখন পৌরসভা হিসেবে ঘোষণা করা হতে পারে। কিন্তু এই অঞ্চলে দমকলের কোনো ব্যবস্থা নেই। আগুন লাগার মতো ঘটনায় আসানসোল বা চিত্তরঞ্জনের উপর নির্ভর করতে হয়,যা সময়সাপেক্ষ এবং ঝুঁকিপূর্ণ। এই ঘটনায় স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা জরুরি। দমকলের স্থায়ী কেন্দ্র না থাকায় ভবিষ্যতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা থেকে যায়।
গোডাউনের ম্যানেজার জানান, সকালে আগুনের খবর পাওয়ার পর তারা দ্রুত দমকল বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তবে মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি স্বীকার করেন, গোডাউনে সামান্য কিছু মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য ছিল। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে তিনি কোনো স্পষ্ট তথ্য দিতে পারেননি। পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। আগুন লাগার কারণ এবং গোডাউনে মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যের উপস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত তদন্তের দাবি উঠেছে।এই ঘটনা রূপনারায়ণপুরের মতো দ্রুত বর্ধনশীল এলাকায় অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার অভাব এবং গোডাউনে মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যের উপস্থিতি নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। প্রশাসনের কাছে দাবি উঠেছে, এই অঞ্চলে দ্রুত দমকল কেন্দ্র স্থাপন করা হোক এবং গোডাউনগুলোতে নিয়মিত তদারকি করা হোক, যাতে জনস্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।

CATEGORIES

COMMENTS

Wordpress (0)
Disqus ( )